মুক্তা চাষে সফল পিএইচডি ডিগ্রিধারী নজরুল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০১:২১ পিএম
ড. নজরুল ইসলাম

পিএইচডি ডিগ্রিধারী নজরুল ইসলাম। ভালো বেতনে চাকরিও করতেন তিনি। কিন্তু করোনার কারণে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। ভাবছিলেন ෴কী করবেন। জমানো টাকা দিয়ে কেনেন ১০ বিঘা জমি। দুটি পুকুর খনন করে শুরু করেন কার্প জাতীয় মাছ চাষ। এক🌳ই সঙ্গে মুক্তা চাষ করেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের ড. নজরুল ইসলামকে।

ড. নজরুল ইসলাম জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত লুৎফর 💜রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, ড. নজরুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ফিশারিজ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। উচ্চতর শিক্ষার জন্য জাপানে চলে যান। সেখানে তিনি গবেষণা করেন সামুদ্রিক প্রবালের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্ꦡরভাব নিয়ে। জাপানের সিজুওকা ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখাপড়া শেষে দেশে ফিরে যোগ দেন জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকায়। করোনার কারণে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে শুরু করেছিলেন ৩ দশমিক ৩ একর জমিতে ‘রাইয়ান জৈব-কৃষি’ প্রকল্প নামে একটি খামার। দুইটি পুকুরের একটিতে মাছ আর অন্যটিতে মুক্তা চাষ করছেন।

ঝিনুকের মধ্যে ইমেজ ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, নানা আকৃতির গহনা, কানের দুল, লকেট, আংটি, ব্যাজ, বাটনসহ নানা অলঙ্কার তৈরি করে বিক্রি করছেন তিনি। এꩵই সব গহনার চাহিদাও ভালো পাচ্ছেন তিনি।

ড. নজরুল ইসলাম বলেন, “বিভিন্ন নদী-নালা থেকে দেশীয় প্রজাতির ঝিনুক সংগ্রহ করে বৈজ্ঞানিক উপায়ে অপারেশন করে পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সাত থেকে আট মাস পর ওই ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ করি। সাধারণ মুক্তার পাশাপাশি ঝিনুকের গর্ভে মুক্তার বিভিন্ন ডিজাইনের কাঠামো তৈরি করা হয়। ঝিনুক চাষ করতে প্রথমে ইমেজ ব্যবহার করতে হয়। তারপর ভাসমান প্লটের ওপর নেট ও রশিসহ বিভিন্ন জিনিস প্রয়োজন হয়ে থাকে। ঝিনুকের জন্য বাড়তি কোনো খাবার প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে এক বিঘা জমির পুকুরে মুক্তা চাষ করছি। একটি ঝিনুক থেকে দুটি মুক্তা পাওয়া যায়। তিন হাজার ঝিনুক চাষ করতে আমার খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। এখন ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ শুর🥂ু করেছি। একেটি মুক্তা ৫০০ টাকা করে বিক্রি হয়। আর মুক্তার গহনা বিক্রি হয় ১২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা।”

মুক্তা চাষে আগ্রহী বেকার যুবকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষ🐲ণও দিয়ে থাকেন তিনি। এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা অনেকেই শুরু করেছেন মুক্তা চাষ। এই পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বেকার যুবকদের তিনি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বেকার যুবকদের আদর্শ হয়ে উঠেছে ড. নজরুল ইসলাম।

মুক্তা চাষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ৩০ ধরনের বিষমুক্ত ফল ও নিরাপ🥂দ সবজি চাষ করছেন। এটা থেকেও তি💦নি ভালো উপার্জন করছেন।

খামারের কর্মী মুনছুর আলী বলেন, “ꦐড. নজরুল ইসলামের মুক্তার খামারে আমি কাজ করছি। তিনি এখানে মুক্তাসহ বিভিন্ন ফলের চাষ করেন। আমিসহ আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে।”

কোটচাঁদপ💛ুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানান, ড. নজরুল ইসলামের মুক্তা চাষ পদ্ধতি খুবই সম্ভাবনাময়। তার থেকে অনেক যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে এই মুক্তা চাষে ঝুঁকছেন। উপজেলা মৎস্য অফিস সবসময় তাদের পাশে ಞআছে।