মাচায় ঝুলছে রসাল তরমুজ

বগুড়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ০৮:২১ এএম

দূর থেকে দেখলে মনে হবে মাচায় লাউ-কুমড়ো ঝুলছে। কাছে গিয়ে ভালো করে দেখলে ভুল ভাঙবে, এগুলো লাউ বা কুমড়ো কিছুই নয়। নেট দিয়ে মোড়ানো ব্যাগের ভেতরে এক একটা রসালো তরমুজ। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্র꧋াম ইউনিয়নের কৃষক জাব্বির হোসেনের বাগানে গেলে অসময়ে এমন রসালো তরমুজ দেখে যে কারোই মন ভরে যাবে। হাইব্রিড জাতের এ তরমুজই এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছে উপজেলার চাকলমা গ্রামের জাব্বিরকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতের চারদিকে বেড়িবাঁধের মতো উঁচু মাটির ঢাল। সেই ঢালে মাচায় ঝুলে আছে তরমুজ। একটি-দুটি নয়, শত♒ শত তরমুজ। মাচায় ঝুলে থাকা তরমুজগুলো বাহারি রঙের। কোনোটির গায়ে ডোরাকাটা দাগ, কোনোটি কালচে সবুজ, আবার কোনোটি হলুদ। তরমুজগুলোর ভেতরের রঙেও পার্থক্য আছে। কোনোটি কাটলে ভেতরে টকট𝕴কে লাল, আবার কোনোটি পাকা মাল্টার মতো হলুদাভ কমলা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে জাব্বির হোসেন ‘তৃপ্তি’, ‘সুইট ব্ল্যাক’ বা কালো জাত, নতুন ‘গোল্ডেন ক্রাউন’ বা হলুদ জাতসহ কয়েকটি জ♌াতের তরমুজ চাষ করেছেন। এজন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্ম✤কর্তা শাহাদত হোসেন তাকে উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করে দেওয়া থেকে শুরু করে নিয়মিত দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। মোট তিন জাতের তরমুজের বীজ লাগানো হয়েছে।

কথা হলে কৃষক জাব্বির হোসেন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র ২০ শতক জমিতে এ বীজ রোপণ করা হয়েছে। রোপণের ৪৪ দিনের মধ্যে তরমুজের ফুল ও ফল আসে। বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ তরমুজ রয়েছে তার জমিতে। এদের মধ্যে কোনোটা ২ কেজি থেকে ৩ কেজি ওজন হ✱য়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর ১৫-২০ দিন পরেই তিꩵনি তরমুজ সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

এ তরমুজ উৎপাদনে জাব্বির হোসেন প্রাকৃতিক জৈব সার ব্যবহার করেছেন এবং এতে কোনো বিষ প্রয়ো𒉰গ করেননি। পোকামাকড় নিধনের জন্য তিনি ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়োলো কালার ট্যাপ পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। এ সবই তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শে করেছেন। এতে এ পর্যন্ত তার প্রায় ৩৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ পাইকඣারি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকায়। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

এলাকার কৃষক মিলন সরকার বলেন, “অসময়ে তরমুজ চাষ করে জাব্বির হোসেন এলাকায় ভালই সাড়া জাগিয়েছেন। আমি নিজে তার বাগান𓃲 দেখে এসেছি। বাগানে প্রচুর ফল এসেছে। আরও অনেক ফুল আছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে আরও অনেক ফল আসবে বলে মনে হচ্ছে। এগুলো সে বিক্রি করে ভাল লাভ করতে পারবে।”

জানতে চাইলে নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আদনান বাবু বলেন, “পরিশ্রম করলে তার ফল আসবেই। তার প্রমাণ পেয়েছেন কৃষক জাব্বির হোসেন। এ কৃষক উপজেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার সামান্য জমিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছ🎃ে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষ করা এই ফসলই এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছে উপজেলার আরও অনেক কৃষককে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।”