অন্যের সন্তান দেখিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২, ০৪:০৯ পিএম

প্রতিবেশীর সন্তানকে নিজের দাবি করে শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেখিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি আদায়ের অভিযোগ উঠে🎶ছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার এক প্রাথমিকের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

এ ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওই বিদ্যালয় এলাকার অভিভাব🐈কেরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মুনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলেয়া সালমা চলতি বছরের ১৪ মার্চ থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করছেন। গর্ভধারণ না করেও এ ছুটি নিতে তিনি ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। প্রতিবেশীর সন্তানকে নিজের দেখিয়ে এ ছুটি আদায় করেন তিনি। কয়েক মাস যেতে না যেতেই বিষয়টি জনসমক্ষে উঠে আসে। অভিযোগ রয়েছে ছুটি নেওয়ার পুরো বিষয়টি প্রধান শিক্ষক খাদিজা 𝓡সুলতানা, উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী ও হিসাবরক্ষক (বড়বাবু) আজিজার রহমান, সহকা꧟রী শিক্ষা কর্মকতা আবু নোমান মো. নওশাদ আলীর যোগসাজশে এ ধরনের অনৈতিক ছুটিতে আছেন ওই শিক্ষিকা।

আলেয়া সালমা বদলি সূত্রে ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মুনিয়ারহাট বিদ্যালয়ে যোগﷺদা🔯ন করেন। ২০১৯ সালে বিয়ে করেন বগুড়ার গাবতলী উপজেলা কাগইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শফি আহমেদ স্বপনকে। বিয়ের পর থেকে বগুড়ায় চলে যান তিনি। এরপর করোনার কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরও তিনি স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। এ সময় তিনি চিকিৎসাসহ নানা অজুহাতে ছুটি নিয়েছেন।

সর্বশেষ মা না হয়েও মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করেন সালমা। চলতি বছরের ১৪ মার্চ সন্🅷তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন দেখিয়ে ১৩ মার্চ থেকে ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করেন আলেয়া সালমা।

কিন্তু গর্ভকালীন সালমার শারীরিক কোনো পরিবর্তন বিদ্যালয়ের সহকর্মীদের নজরে পড়েনি। এ কারণে তিনি ‘১৩ মার্চ’ কোলে শিশু সন্তান নিয়ে 🍃উপজেলা শিক্ষা অফিসে হাজির হন। জমা দেন ছুটির আবেদন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শারমীন নামের এক নারী। কিন্তু সালামার কোলের শিশুটি তার নিজের সন্তান নয়।

মুনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তান পড়েন, এমন কয়েকজন অভিভ𒁏াবক বলেন, “মাঝেমধ꧙্যে আলেয়া আপা স্কুলে আসতেন। আমাদের সঙ্গে দেখা হতো তাকে দেখে সন্তানসম্ভবা মনে হয়নি।”

অভিভাবক ফরিদুল ইসলাম, আব্দুল মমিন, ফরিদা বেগম জানান, অলেয়া সালমা আপা ভ༒ুয়া সন্তান দেখিয়ে ছুটি নিয়েছেন। আর এসব কিছু করে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ও অಞফিসাররা।

বিদ্যালয়টির অন্য শিক্ষকরা জানান, নাগেশ্ব༺রী থাকা অবস্থায় তিনি আসতেন। 🌺তবে বগুড়া যাওয়ার পর তাকে আসতে দেখতাম না। সন্তান হওয়ার বিষয়টি তারা শুধু শুনেছেন, দেখেননি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আলেয়া সালমার ঘরে প্রথম স্বামীর দ𒉰ুই সন্তান, দ্বিতীয় স্বামীর এক সন্তান রয়েছে। তৃতীয় (বর্তমান) স্বামীর ঘরে কোনো সন্তান না থাকলেও তিনি নিজেকে চার সন্তানের জননী হিসেবে দাবি করেন। তবে শিক্ষা অফিসে শুধু প্রথম স্বামীর দুই সন্তানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা আছে।

শেষ যে শিশুটিকে নিজের দেখিয়ে সালমা ছুটি ভোগ করছ🐷েন, সেই সন্তান তার নয়।

সে শিশুটি সালমার বর্তমান স্বামীর𝔉 বাড়ির পাশের দম্পতি আনিছুর রহমান পাশা ও শারমীনের ✤দ্বিতীয় সন্তান।

এ বিষয়ে শারমীন বলেন, “সালমা আমার আত্মীয়ের মতো। আমি সন্তানসহ তার সঙ্গে কুড়িগ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার বাচ্চা তার হিসেব🦋ে চালিয়ে দিয়েছে, সেটা আমি কীভাবে বুঝব।”

তিনি আরও জানান, তা🐓র বড় মেয়ের নাম আফিফা। বয়স পাঁচ বছর। আর ছোট মেয়ের ܫনাম আশফিয়া। মার্চ মাসে আশফিয়ার জন্ম হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আলেয়া সালমা বলেন, “কী হয়েছে না হয়েছে সবাই জানেন। আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এটিওসহ সবাইকে ম্যানেজ করে আমি ছুটিতে আছি। শিক্ষা অফিসের বড়বাবু এসব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আপনারা নিউজ করে আমার কিছুই কಌরতে পারবেন না। যত দিন আমার ট্রান্সফার হবে না, তত দিন আমি ছুটি নিয়েই চলব🤡। আমাদের সিস্টেম আছে। চাকরিচ্যুত করার ক্ষমতা সরকারেরও নেই।”

প্রধান শিক্ষক খাদিজা সুলতানা সꩲব অভিযোগ অস্বীকার করে বলে🥀ন, “শিক্ষক আলেয়া সালমা নিয়মমাফিক ছুটিতে আছেন।”

উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী ও হিসাবরক্ষক (বড়বাবু) আজিজ𝄹ার রহমান তার বিরুদ্ধে ওঠা সহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আলেয়া সালমা তার প্রতিবেশী বোন হন।

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু নোমান মো. নওশাদ আলী বলেন, “বিধি অনুযায়ী শিক্ষিকার মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয়েছে। এখন কেউ যদি অন্যের বাচ্চাকে নিজের বলে চালিয়ে দেয়, তাহলে কিছু করার নেই। কে𓂃ননা, আমরা তো আর ডিএনএ পরীক্ষা করি না, করার উপায়ও নেই।”

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলী𒆙 বলেন, “সালমার সন্তানের বিষয়টি যদি মিথ্যা হয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”