৪০ বছরের পুরোনো ফকিরের আস্তানা ভাঙচুর

নড়াইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২, ০৫:০৯ পিএম

নড়াইলের কালিয়া ౠউপজেলার পুরুলিয়ায় বাউল হারেজ ফকিরের ৪০ বছরের পুরোনো আস্তানায় হামলা চালানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বাউলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে হামলাকারী মিন্টু শেখ সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকের সামনেই বাউলেরౠ ভক্তদের শাসিয়ে যান। মিন্টু শেখ পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আম𝐆িরুল ইসলাম মণি চাচাতো ভাই।

এর আগে শনি✤বার (২৭ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে আস্তানায় হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় হারেজ ফকির বুধবার (৩১ আগস্ট) রাতে কালিয়া থানায় জিডি ✨করেন।

দেশ স্বাধীনের পর ঘরবাড়ি সব নদীতে ভেঙে যাওয়ায় দেশান্তরী হন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার চিলমারীর চরের হারেজ মিয়া। এক সাধু বাবার সঙ্গে ভারতের আজমির শরি🐽ফে চলে যান। চার বছর সেখানে থাকার পর বাংলাদেশে ফিরে এসে বাউল সাধকদের সঙ্গে বিভিন্ন দরবারে ঘুরে বেড়ায়। প্রায় ৪০ বছর আগে উপজেলার বাজে-🗹বাবরা গ্রামের বাউল মোকছেদ ফকির তাকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় এবং মেয়ে শরিফা বেগমের সঙ্গে বিয়ে দেন।

সেই থেকে হারেজ ফকির এখানে ‘শরিফা বাউল আশ্রম’ নামে একটি আস্তানা খুলে বাউলগানের সাধনা করে আ♒সছেন। এলাকায় তার বেশ কিছু ভক্ত রয়েছেন। তারা প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে এসে গানবাজনা করেন। এ ছাড়া প্রতিবছ🐻র ২৬ অগ্রাহায়ণ এখানে বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়।

সংশ্লি🎉ষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ও জিডি সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মণির স্বজন ও সমর্থকরা গাজা সেবন ও বিক্রির অভিযোগে এনে🅰 হারেজ ফকিরকে বারইপাড়া বাসস্ট্যান্ডে মারপিট ও গালিগালাজ করেন। এ ঘটনায় হারেজ ফকির চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দেন। সন্ধ্যার পর চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অফিসে সালিস বসে।

সালিস শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর রাত ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের বড় ভাই হাজী ম🐈ো. আলী মিয়া শেখের হুকুমে চাচা﷽তো ভাই মিন্টু শেখের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল হারেজ ফকিরের আস্তানায় হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় হারমনিয়াম, দুটি একতারা, দুটি চাকি, পেনজুড়, দুটি খোল, নাল, ডুগি-তবলাসহ মোমের মমি ভাঙচুর করে।

বৃদ্ধ বাউল হারেজ ফকির কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমি ৪০ বছর ধরে এখানে সাধনা করি। কারও সঙ্গেও নাই পাছেও নাই। আমার কিছু ভক্তবৃন্দ আছে। তারা প্রতি বৃহস্পতিবার আমার এখানে গান বাজনা করতে আসে। এ অপরাধে আমাকে মারধর করে। এর 🌠আগে আরও চারবার আমার যন্ত্রপাতি ভেঙেছে চেয়ারম্যা🐟নের লোকেরা।

আমি কোনো বিচার পাইনি। বর্তমানে আমি ও আমার ভক্ত🅷রা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছꦏি। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছি।

মিন্টু শেখ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা 🦹কোনো কিছুই ভাঙচুর করিনি। হারেজ ফকির এখ💮ানে গাঁজার ব্যবসা করেন। এ কারণে চেয়ারম্যান আর হাজী আলী মিয়া তার এসব অনৈতিক কাজ করতে নিষেধ করেছেন।”

হারেজ ফকিরের স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, “আমার স্বামী ꦗএখানে ফকির সাধনা নিয়ে থাকে। তার ভক্তবৃন্দরা আ🔥সে, গান বাজনা করে। তাদের সহযোগিতায় আমাদের সংসার চলে। এই গানবাজনা করার কারণে সেদিন রাতে হামলা করে বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করেছে।

প্রতিবেশী নাজমুল শেখ, ময়না বেগম, ভক্ত ইপিয়ার শেখ, জারি সম্রাট রওশন আলীর ভক্তকন্যা ওবেগমসহ অনেকই জানান, হারেজ ফকির এখানে দীর্ঘদিন ধরে গানবাজনা ও ফকিরি সাধনা করেন। আর সে কারণেই চেয়ারম্যানের লোকেরা এটা সহ্য করতে না পেরে নিরীহ ওই সাধকের আস্তানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।

আমিরুল ই🐈সলাম মণি বলেন, “মারপিটের ঘটনা আমি বসে মিটিয়ে দিয়েছিলাম।”

আপনার নির্দেশে এ ঘটনা হয়েছে 🥀এই প্রসঙ্গে তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, “ভাঙচুরের কোনো 🌳ঘটনাই আমি জানি না।”

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত ꦕকর্মকর্তা (ওসি) তাসনিম হোসেনকে একাধিকবার ফꦆোন দেওয়ার পরে ধরেননি।

পুলিশ সুপার মোস. সাদিরা খাতুন বলেন, “ওদের কাছে পুলিশ꧙ের কোনো নম্বর থাকলে তাৎক্ষণিক যোগায🌃োগ করতে বলেন, বাকিটা আমি দেখছি।”