‘আমি এক সপ্তাহ জীবন মৃত্যুর মাঝামাঝি ছিলাম’

নড়াইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২২, ০৯:৫২ পিএম

আত্মগোপনে থেকে অবশেষে দেড়মাস পরে নিজ কলেজ ক্যাম্পাসে আসলেন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্𒁏বপন কুমার বিশ্বাস। নিজ ক্যাম্পাসে হাসিমুখে ফিরলেও নিজের অপমানের🅘 কথা ভেবে কাঁদলেন আর ঘটনার জন্য দায় চাপালেন কলেজের গভর্নি বডির সভাপতির ওপর।

বুধবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় তাকে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় ন🎃েতারা। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ফুলের মালা দিয়ে এবং কদমবুচি করে প্রিয় শিক্ষককে স্বাগত জানান।

প্রাথমিক বক্তব্যে শিক্ষক স্বপন মিডিয়া൲কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, “আপনাদের জন্যই আমিসহ শিক্ষককুল তাদের সম্মান ফিরে পেয়েছে।”

দুপুর ১২টার দিকে অধ্যক্ষকের কক্ষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সুবাষ চন্দ্র বোস, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অ্যাড. অচিন চক্রবর্তী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার আব্দুস সালাম হাওলাদার, রেজিস্ট্রার মা🧔হফুজ আল হাসান, পরিচালক মনিটরিং ও মূল্যায়ন মো. রফিকুল ইসলাম, পরিচালক আইন ও বিচার দপ্তর মো. ছিদ্দিকুর রহমান, বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত মাহমুদ, গর্ভনিং বডির সদস্য আনিসুর রহমানসহ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি বর্গ। শিক্ষক স্বপন কুমার তার গলার একটি মালা খুলে সংসদ সদস্য কবীরুল হক মুক্তিকে পরিয়ে দেন। দুপুর ১টার দিকে সবার উপস্থিতে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া হয়।

শিক্ষক স্বপন আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, “আমি 💦এক সপ্তাহ জীবন মৃত্যুর মাঝামাঝি ছিলাম। আমার স্ত্রী এবং কলেজের শিক্ষক হুমায়ুন কবীর সব সময়ই আমাকে চোখে চোখে রেখꦰেছে আমি যেন কোনো অঘটন না ঘটিয়ে বসি। আমার খোঁজ নিয়মিত সকলেই নিয়েছে যারা আমার আপনজন।”

ওই শিক্ষক আরও বলেন, “দেশের বিভিন্ন প্রতিষ🌱্ঠান যারা আমার জন্য কথা বলেছেন, আন্দোলন করেছেন ও মিডিয়া ভাইদের জন্য আজকে আমার ফিরে আসা। আমি প্রকাশ্যে আসতে পারিনি, কারণ মা তার ছোট শিশুকে বলবে ওই দেখ সেই জ▨ুতার মালা পরা প্রিন্সিপ্যাল যাচ্ছে।”

এ কথা বলতে বলতে তিনি কেঁদে ফেলেন।

এরপর তিনি কলেজের ম্যানেজ෴িং কমিটির সভাপতিꦉ অ্যাড. অচীন চক্রবর্তীকে উল্লেখ করে বলেন, “কেন আমার সঙ্গে এমন করা হলো? প্রশ্নটা আমি মাননীয় সভাপতির কাছে করতে চাই, কেন আমাকে দিয়ে আপনি এতো বড় ঘটনা ঘটালেন?”

এদিকে অধ্যক্ষ স্বপন কলেজে আসায় খুশি শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ এলাকার গণ্যমান্য ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। ব♊িপরীতে প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করায় ছাত্রদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। তারা পুরো ঘটনার সমাধান করে একসঙ্গে শ্রেণিতে বসতে চান।

নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবীরুল হক মুক্তি শিক্ষক স্বপন কুমারের প্রতি ঘটনাকে অন্যায় হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করছি। আশাকরি সবকিছুই আগের মতো চলবℱে। আমার ব্যস্ততার কারণেই স্বপন বাবুর এই প্রত্যাবর্তন কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে।”

এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওꦡকত মাহমুদ বলেন, “আমরা খুবই সতর্কতার সঙꦛ্গে ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করছি। যারা দোষী কেবল তারাই আইনের আওতায় আসবে।”

কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অ্যাড. অচীন চক্রবর্তী পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান যেন প্রত্যেক ছাত্র কলেজে এসে ক্লাস করতে পারে। শিক্ষক স্বপন কুমারের অভিযোগ বিষয়ে সভাপতি অ🎐চীন চক্রবর্তী বলেন, “আমিতো সেদিಞন ঢাকাতে ছিলাম, আমি পরদিন ১৯ জুন কলেজে গেছি, সেদিন তো কিছু ঘটেনি।”

মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছা🐷ত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে ভারতের বির্তকিত রাজনৈতিক নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে একটি স্ট্যাটাস লেখেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন বিক্ষুদ্ধ জনতা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে জুতার মালা পরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলে ১৯ জুন থেকে কলেজের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।