পদ্মা সেতুতে খুলবে মোংলা বন্দরের অর্থনৈতিক দ্বার

এমএম ফিরোজ, মোংলা প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২, ০৯:৪২ এএম

স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত বাগেরহাটের মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বন্দর ব্যবহারকারী, ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও শিল্পাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। কারণ, পদ্মা সেতুর চালু হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নের ফলে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবকাঠামোগত যেমন উন্নয়ন হবে, তেমনি শিল্পকলকারখানা গড়ে ওঠার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যেও ব্যাপক প্রসার ঘটবে🌼।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর মোংলা বন্দর থেকে সড়কপথে ঢাকায় পণ্য পরিবহনে সময় লাগ🌟বে মাত্র তিন ঘণ্টা। ফেরি পারাপারের কারণে আগে যেখানে সময়  লাগত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা, এখান তাদের সময় বাঁচবে অন্তত ৬ ঘণ্টা। এর ফলে পরিবহন খরচ ও কমে যাবে অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হবেন ব্যবসায়ীরা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, সড়কপথে পণ্য পরিবহন দেরি ও ফেরি পারাপারে ভোগান্তি হওয়ার কারণে একসময় ঢাকার ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী ছিলেন না। পদ্মা সেতু ൲চালু হলেই মোংলা ꦏবন্দরের ব্যবহার কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

মোহাম্মদ মুসা দাবি করেন, সময় ও অর্থের কথা চিন্তা করে ব্যবসায়ীরা চট্টগ্🌱রামের বিকল্প হিসেবে ‌মোংলাকে ভাবতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সংগঠন (ব🅰িজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকিএমইএ) মোংলা বন্দর ব্যবহারে তার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষ সরকারের সহায়তায় বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বন্দরের সক্ষমতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক জানান, সেতু চালু হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। মোংলা ইপিজেডএ বিনিয়োগকারীদের কাঁচামাল পণ্য আগে যেখানে জাহাজে করে আসত এখন আসবে সড়কপথে। সেতুট🌜ি চালু হলেই এই ইপিজেডে বিনিয়োগকারী বাড়বে। ইতোমধ্যে অনেক বিনিয়োগকারী এ ইপিজেডএ ব্যবসা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাই বিনিয়োগকারীদের চাহিদানুযায়ী সেবা দিতে মোংলা ইপিজেডএ নতুন আরও ৬২ টি প্লট প্রস্তুত করা হচ্ছে।

মোংলা বন্দর বার্থ-শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জিসান ভুট্ট বলেন, “রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল ও রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ দেশের বড় বড় মেগা প্রকল্প নির্মাণের মালামাল এই বন্দরের মাধ্যমে আমদানি ও পরিবহন হচ্ছে, ভবিষ্যতে সেতুর সুবাদে যা আরও বাড়বে। আমরাই এখান থেকে আমদানি হওয়া পণ্য খালাস করে নদী ও স✃ড়কপথে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে পৌঁছে দিয়ে আসছি। কিন্তু পদ্মায় সেতুর অভাবে সেসব মালামাল দেরিতে পৌঁছেছে।”

জিসান ভুট্টো আরও বলেন, “মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী নৌ ফেরিতে ঘণ্টার ঘণ্টার পর 𒁃পণ্য আটকে থাকত। কিন্তু এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সেই সমস্যায় আর পড়তে হবে না। তাই পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও পরিবহনে অনেক সময় বাঁচবে⛦ আমাদের। খুবই স্বল্প সময়ে মোংলা বন্দর থেকে যেকোনো পণ্য খালাস হওয়ার পর তা খুব সহজেই পৌঁছে দেওয়া যাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এতে করে নিদিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণের অর্থনৈতিক দ্বার খুলে দেবে। ফলে এ অঞ্চলে গড়ে উঠবে বিভিন্ন ধরনের ভারী শিল্পকলকারখানা।”