লিচু𒅌র রাজধানী খ্যাত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন বাগানে ইতোমধ্যে লিচু বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। বোম্বাই ও চায়না জাতের লিচুর গায়ের রং এখনও পুরোপুরি লাল হয়ে ওঠেনি। দুই সপ্তাহ পর বোম্বাই ও চায়নার লাল টকটকে রসালো চেহারা🔴 ফুটে উঠবে গাছে গাছে।
পাবনায় চলতি মৌসুমে ৫০০ কোটি টাকার🌃 লিচু বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। গত কয়েক বছর জেলার লিচু চাষিরা আশানুরূপ লাভ করতে পারেননি। এ বছর লিচুর বাম্পার ফলনে ভালো লাভ হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে আঁটি জাতের লিচু সংগ্রহ শুরু হয়েছে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে অন্যান্য জা🌠তের লিচুও পাবনার বাজারে ব্যাপকভাবে পাওয়া যাবে।
জেলার ঈশ্বরদী উপಞজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গাছ থেকে লিচু আহরণ, বাছাই এবং প্যাকেট করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। উপজেলার মীরকামারী, জয়নগর, জগন্নাথপুর, বকচারপুর, ছলিমপুর, শাহপুর, দিয়ার শাহপুর, আথাইলশিমুলসহ প্রায় ৩০টি গ্রামে শুধু লিচু আর লিচু। এছাড়া সদর উপজেলার উগ্রগড়, জোয়ারদহ, হামিদপুরসহ প্রায় ১৫টি গ্রাম এবং চাটমোহর ও আ꧂টঘরিয়া উপজেলায় প্রচুর লিচুর আবাদ হয়েছে।
লিচু চাষিরা জানিয়েছেন, চায়না-২, চায়না-৩ ও বোম্বাই ඣজাতের লিচু বাজারে আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। বোম্বাই ও চায়না লিচুর গায়ের রং এখনও পুরোপুরি লাল হয়ে ওঠেনি। দুই সপ্তাহ পর বোম্বাই লিচুর লাল টকটকে রসালো চেহারা ফুটে উঠবে গাছে গাছে। কিন্তু এর মধ্যে দেশী জাতের অনেক উন্নত মানের লিচু কেনা-বেচাౠ চলছে। এখন প্রতিদিন বাগান থেকে লিচু আহরণ করছেন তারা। বাগান থেকেই বিক্রি হচ্ছে ফলটি। ছলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর শিমূলতলায় প্রতিদিন সকালে বসছে বিশাল লিচুর হাট। জয়নগর শিমূলতলা ছাড়াও উপজেলার আওতাপাড়া, বাঁশেরবাদা, জয়নগর বোর্ডঘর, সাহাপুর ও দাশুড়িয়ায় পাইকারি লিচুর হাট বসছে। প্রতিদিন এসব হাট থেকে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ ট্রাক লিচু যাচ্ছে সারা দেশে।
চাষিদের অভিযোগ, প্রচুর লিচু ফলনের পরেও💛 স্বল্প সময়ের এই ফল সংরক্ষণ করতে পারছেন না। লিচুর সংরক্ষণের অভাবে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একটি লিচু সংরক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া পাননি তারা।
আথাইলশিমু🐓ল গ্রামের লিচু চাষি শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, তার লিচু বাগানে ৩০টি গাছ আছে। প্রতিটি গাছ থেকেই এবার ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর একটি মাঝারি আকারের গাছ থেকে ৮ থেকে ১০ হাজারের বেশি লিচু পাওয়া যায়নি। একই আকারের গাছ থেকে এ বছর ১২ থেকে ১৫ হাজার লিচু পাওয়া যাচ্ছে। তবে ফলন ভালো পেলেও বাজারে লিচুর দাম কম হওয়ায় আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
গোলাম মোস্তফা বলেন, “গত বছর প্রতি হাজার লিচু ২২০০ থে𒆙কে ২৩০০ টাকায় বিক্রি করলেও, এ বছর ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে, ফলন ভালো হওয়ায় দাম নিয়ে খুবไ একটা চিন্তিত নই।”
এদিকে, লিচু সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের। এক মণ লিচু প্রক্রিয়া করতে দুইজন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। লিচু সংগ্রহ শুরু হওয়ায় অꦑনেকেই লেখাপড়া বা সংসারের কাজের পাশাপাশি বাগানে শ্রম দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
উপজেলার তিলকপুর গ্রামের কলেজছাত্র আলিফ লিচুর মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাগানে কাজ করছেন। তার মতো অনেকেই বাগানে মৌসুমি 🅷শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।
আলিফ জানান, সকালে কয়েক ঘণ্টা লিচু বাগানে কাজ করেই ৫০০ টাকা আয় করা সম্ভব। লিচু মৌসুমে বিপুল সংখ্যক মৌসুমি শ্রমিক প্রয়োজন হওয়ায় তার মত অনেকেই লিচু বাগানে কাজ করে অতিরিক্তܫ আয় করছেন।
জে𒅌লা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, জেলার লিচু বাগানগুলোর আয়তন এ বছর ৪ হাজার ৭৩১ হেক্টরে গিয়ে ঠেকেছে। এসব বাগান থেকে ৪২ হাজার ৫৭৯ টন লিচু পাওয়া যেতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, “লিচুর ফলন উপযোগী আবহাওয়ার পাশাপাশি গ্রীষ্মের শুরুতে বড় আকারে ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হবে। ব্যবসা হবে কয়েকশ কোটি টাকার। এখানে কৃষকের স্বার্থেই একটি লিচুসহ ফল জাতীয় গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউ🔜ট প্রয়োজন। এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জোড়ালোভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। আশা করা যায় কৃষকের স্বার্থেই সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।”