বছরজুড়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন সাকিব

তারিক আল বান্না প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ০২:৪৫ পিএম
সাকিব আল হাসান। ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার, একাধিক বিশ্ব রেকর্ডের মালিক সাকিব আল হাসানের জন্য ২০২৪ সালটা ছিল বিতর্কে ভরা এবং অধিকার বঞ্চিত হওয়ার সময়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল গঠন করে বিসিবি। অথচ, সাকিবকে কাঠগড়ায় দাড় করানো হয়।🐲 বিসিবির বর্তমান কমিটির মতো নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন কমিটির সময়েও সাকিবকে জাতীয় দল থেꦿকে বাদ দেওয়ার নানা চক্রান্ত করা হয়। পাপনরা অবশ্য তা পারেননি। কারণ, সাকিব সারাদেশে খুবই জনপ্রিয়, একজন বিশ্বসেরা ক্রিকেট তারকা এবং সর্বপরি সরকারদলীয় এমপি ছিলেন বলে। 

সাকিবের ইচ্ছে ছিল দেশের মাটিতে টেস্টকে বিদায় জানাবেন দক্ষিণ আফ্রিকার🎶 বিপক্ষে খেলে। কিন্তু জাতীয় দলে তাকে যেন নিতেই চান না বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচকমন্ডলী। সম্ভবত সেটাও হয়ে এসেছে বিসিবিরই ইঙ্গিতে। দেশের মাঠে নিজের বিদায়ী টেস্ট খেলতে চেয়েও তিনি পারেননি এক ‘ভূয়া আন্দোলন’ নাটকের কারণে। যেখান🍌ে তার বিপক্ষে ১০-১৫ জনের একটি সমর্থক দলকে মিরপুর স্টেডিয়ামের বাইরে প্রতিবাদ করতে দাড় করানো হয় বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর ইঙ্গিতে। কারণ,  তার একদিন পরই সাকিবের পক্ষে হাজার হাজার সমর্থক ঐ মিরপুর স্টেডিয়ামেই মিছিল-সমাবেশ-মানববন্ধন করে। সেটা কিন্তু আমলে নেয়নি বিসিবি। যথারীতি তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করে বিসিবি। ফলে ঐ টেস্ট সিরিজে খেলা হয়নি সাকিবের।

এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে নেওয়া হয়নি তাকে। বিসিবির সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি বলেন, সাকিব নাকি ওয়ানডে সিরিজের জন্য প্রস্তুত নন। অথচ, সকলেই জানে ঐ সময়ে সাকিব আবুধাবি টি-টেন লিগে খেলছিলেন। এরপর শ্রীলঙ্কায় খেলেন টি-টেনের আরেক লিগে। লঙ্কান টি-🦩টেনে সাকিব অসাধারণ ও বিধ্বংসী ব্যাটিং করেন তা সকলেই জানে। সাকিব ৭ ম্যাচে ৪৫.৩৩ গড়ে এবং ২১৫.৮৭ স্ট্রাইকরেটে ১২টি চার ও ১১টি ছক্কায় করেন ১৩৬ রান।

টেস্ট দলের হয়ে সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে তার বিশাল ভূমিকা কারও অজানা 🔯নয়। ভারতের বিপꦦক্ষে সিরিজ হারলেও সাকিব দারুণ অলরাউন্ডিং পারফর্ম করেন।

সাকিবকে সবশেষ রঙিন পোশাকে দেখা গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সাদা পোশাকে শেষটা দেখা গিয়েছিলꦉ ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে।

বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তাকে বরখাস্ত করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। বোলিং অ্যাকশনে পাস না করা পর্যন্ত ইসিবির আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে বল হাতে নিতে পারবেন না সাকিব। ডিসেম্বরের শুরুতেই সাকিবের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা নেয় লাফবরো൩ ইউনিভার্সিটি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক, তিনি সে পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। অবশ্য এটা বড় কোনো বিষয় নয়। পরবর্তীতে কোনো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই বোলিং করতে পারবেন তিনি। 

এখন ধরে নেওয়া যায়, আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণার আগে সাকিবকে ঘিরে একই নাটক তৈরি করা হবে। মামলার কথা বলা হবে। সকলেই জানে, ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সাকিব ছিলেন দেশের বাইরে। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য। আর তাকে জড়ানো হয়েছে হত্যা মামলায়। সাকিবের মতো বিশ🎀্ব তারকাকে হেয় করতে, বাংলাদেশের ক্রিকেট সুনামকে নষ্ট করতে, এদেশেরই মানুষ তাকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় বিশেষ মহলের ইঙ্গিতে। সেটা বুঝতে আর কারো বাকি নেই।

বড় মাপের ক্রিকেটার হয়েও তাকে সবসময় লড়াই করেই টিকে থাকতে হয়েছে। সেই লড়াই করার মতো হয়তো আর বাকি কিছু নেই। হয়তো সাকিবের বাংলাদেশ🐼ের জার্সি গায়ে𒅌 শেষ খেলাটাও হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটারের ‘পোস্টারবয়’ সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সামনেই এখন বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। হয়তো সেটার শেষটা ঘটেই গেছে। শুধু বাকি আনুষ্ঠানিকতা।