বেইলি রোডের বেশ কাছেই বাসা আমার। গতকাল যে ভবনে আগুন লেগে ৪৩ জন মারা গেলেন, সেটি আমার বাসা থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা-দূরত্বের পথ। নানা কা♎জ সেরে প্রায় মধ্যরাতে যখন বা෴সায় ফিরছিলাম কাল রাতে, ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মানুষগুলো। হাহাকার-আহাজারি-কান্নাকাটিতে ভারী হয়ে উঠেছে রাতের আকাশ।
বেইলি রোডে যাওয়া-আসা প্রায় কৈশোর থেকেই। একসময় এটার নাম হয়েছিল নাট্যসরণি, মঞ্চনাটকগুলো এখানেই মঞ্চায়ন হতো বলে। নাট্যজন-নাট্যকর্মী-সংস্কৃতিকর্মীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে থাকতো এই অঞ্ꦗচল। একসময় বদলাতে লাগলো বেইলি রোডের চেহারা। নাট্যসরণি থেকে ধীরে ধীরে হয়ে উঠলো খাদ্যসরণি। রাস্তার দুপাশে অসংখ্য হোটেল-রেস্তোরাঁ-খাবারের দোকান। অনেকগুলো বিপনিবিতানও। বহুতল ভবন সারি সারি। ঢাকার অন্যতম অভিজাত এলাকা। কিন্তু সুদৃশ্য এসব ইমারত যে একেকটা মৃত্যুফাঁদ, গতকালের ঘটনা যেন তাই জানিয়ে গেল।
ঢাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ হয়েই চলেছে। কিন্তু নিরাপত্তার কথা কতটুকু ভাবছেন নির্মাতাগণ তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। নতুন ভবনে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে অন๊েক বছর ধরে। এসব ভবনের বাসিন্দারা সিলিন্ডার-গ্যাস ব্যবহার করেন। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল যে ভবনটি পুড়ে গেল সেটির প্রতিটি ফ্লোরে, এমনকি সিঁড়িতেও, গ্যাস-সিলিন্ডার ছিল। আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সেটিই হয়তো অন্যতম কারণ। এই বাস্তবতা এখন প্রায় সব নতুন বহুতল ভবনেরই। স্রেফ অগ্নিকুণ্ডের ওপর বসে আছে পুরো ঢাকা𝓀 শহর।
এর আগে পুরনো ঢাকার নিমতলিতে🐽 (২০১০ সালে) আগুন লেগে মারা গিয়েছিল ১২৮ জন, চকবাজারে ဣ(২০১৯ সালে) মারা গিয়েছিল ৭১ জন। আমরা বলেছিলাম, পুরান ঢাকা যেন এক জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড। অনেক কথাবার্তা হয়েছিল তখন, কিন্তু কিছুরই সমাধান হয়নি। এরপর (২০১৯ সালে) বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লেগে মারা যায় ২৭ জন, গতকাল বেইলি রোডে মারা গেল ৪৩ জন।
পুরান ঢাকা বা নতুন ঢাকা, অভিজাত বা অনভিজাত এলাকা যা-ই হোক ন𒉰া কেন, কোথাও কেউ নিরাপদ নয়। অনেক কথা হবে, তদন্ত কমিটি হবে, রিপোর্ট পেশ করা হবে, কিন্তু কোনো সমস্যার সমাধান কর🐼া হবে না।
বেইলি রোড এবং তার আশেপাশের এলাকা আজকে শোক ও বিষাদে স্তব্ধ হয়ে আছে। আমার প্র🦂তিবেশীদের কেউ কেউ মারা গেছ🍷েন এই ঘটনায়। যারা বেঁচে আছেন তারাও কোনোদিন এই বিভীষিকা ভুলতে পারবেন না।
আমি নিজেও শোকার্ত, বেদনার্ত, অসহ🍰ায় বোধ করছি। এই শহর থেকে যদি পালাতে পারতাম!