ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে রাশিয়া

আলী রীয়াজ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২, ১২:৫৩ পিএম

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সূচনা হয়েছে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সীমানা লঙ্ঘন করে একাধিক এলাকা দিয়ে রাশিয়ার বাহিনী অগ্রসরমাণ, ইতিমধ্যেই এই হামলায় যুক্ত হয়েছে বিমানবাহিনী,🐽 নৌ বাহিন✤ী। ওডেসার বন্দরে রাশিয়ার সৈন্যরা অবতরণ করেছে। 

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুটি এলাকা, যেখান রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৪ সাল থেকে দখল করে আছে, তাদের স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রাশিয়া এই যুদ্ধের যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা করছে। রাশিয়ার এই আচরꦉণ কেবল যে আন্তর্জাতিক আইনের নগ্ন বরখেলাফ তা-ই নয়, ১৯৯৪ সালের একটি স্মারকের বরখেলাফও। ১৯৯৪ সালে ইউক্রেন যখন তার হাতে থাকা সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করে নন-প্রলিফিরেশন অব নিউক্লিয়ার উইপেন ট্রিটি বা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্বাক্ষর করতে স꧒ম্মত হয়, সেই সময় একটি স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে স্বাক্ষর করেছিল ইউক্রেন, রাশিয়া, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। বুদাপেস্টে ৫ ডিসেম্বর ১৯৯৪ সই করা এই স্মারকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল যে, তার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা হবে না। 

মাত্র ছয় অনুচ্ছেদের এই স্মারকের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, “রাশিয়ান ফেডারেশন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে হুমকি বা বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের বাধ্যবাধকতা পুনর্ব্যক্ত করছে, এবং তাদের কোনো অস্ত্রই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা বা জাতিসংঘের সনদের আওতায় গৃহীত ব্যবস্থা ছাড়া আর কোনো&nbꦦsp;কারণে ব্যবহার করা হবে না।” (ইংরেজি ভাষ্য- The Russian Federation, the United Kingdom of Great Britain and 🌸Northern Ireland and the United States of America reaffirm their obligation to refrain from the threat or use of force against the territorial integrity or political independence of Ukraine, and that none of their weapons will ever be used against Ukraine except in self-defence or otherwise in accordance with the Charter of the United Nations.)। 

রাশিয়ার আগ্রাসন সেই চুক্তির বরখেলাফ এবং ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। যারা রাশিয়ার এই আগ্রাসনের পক্ষে কথা বলছেন তারা এই স্মারকটি পাঠ করতে পারেন। এই চুক্তিতে কোথাও বলা হয়নি যে, ইউক্রেন চাইলে ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। ফলে রাশিয়া এবং তার সমর্থকরা নিশ্চয়ই এটা বিস্মৃত হবেন না যে, বড় এবং শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রতিবেশীদের জন্য এই আগ্রাসন কী বার্তা পাঠাচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার এই আগ্রাসনের ফল কেবল ইউক্রেন বা ইউরোপ ভোগ করবে বলে যারা মনে করছেন, তারা আগামীকাল বিশ্ববাজারের দিকে নজর রাখুন। এর আশু অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া আপনার ঘরে পৌঁছুতে দেরি হবে না। তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, এর দীর্ঘমেয়াদি ফল হচ্ছে সারা বিশ্বে অস্থিরতার নতুন যুগের সূচনা হলো। আর এই যুদ্ধে, যেকোনো যুদ্ধের মতোই, যে ভღয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের শুরু হলো তা শিগগির শেষ হবে না।