যারা স্কাউটিং করে, তাদের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ট্রাফিকের কাজে সহযোগিতা করা, দুর্ঘটনা ও দুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা, বৃক্ষরোপণ করার কাজগুলো নতুন নয়। এখন দেশ সংস্কারের ইচ্ছে নিয়ে প্রচুর শিক🎃্ষার্থী ট্রাফিক কন্ট্রোল করছে। একটু শো অফও হচ্ছে, তাতেও ক্ষতির কিছু নেই। সবাই একসঙ্গে এক কাজ করতে গিয়ে একটু গ্যাঞ্জামও পাকিয়ে ফেলেছে। অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্ট হওয়ার অবস্থা দেখে অনেকেই বিরক্ত প্রকাশ করছেন। আমি শুধু ওদের খাটুনি দেখে কষ্ট পাচ্ছি।
কেউ কেউ ওদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে বলছেন। কিন্তু বইয়ের পড়াই কি সব? পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়াই কি সব? নতুন কারিকুলামে কিন্তু এভাবেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করার অনুশীলন রয়েছে। কৃষকের সঙ্গে মাঠে কাজ করা কিংবা মালির সঙ্গে বাগানে কাজ করার অনুশীলন তো সপ্তম শ্র💫েণির বিজ্ঞান বইতেই রয়েছে।
আমি বরং বলি যে ওরা এভাবেই দেশের কিছু কাজ করুক, বাস্তবতা বুঝুক। তবে সবাই দলবেঁধে শুধু ট্রাফিক কন্ট্রোল করলেই তো হবে না! প্রচুর কাজ আছে দেশে। হাসপাতালে, আদালতে, এনআইডি/জন্মনিবন্ধন সংশোধনীর অফিসে, থানাতে, বাজারে, কত দিকে কত কাজ! অবশ্য অন্যান্য কাজগুলো করলে সরাসরি মানুষের চোখে ধরা পড়বে না, মহাসড়কগুলোর ওপর থাকলে যতটা! তবু সড়ক থেকে ওদের উচিত হবে, অন্যান্য অফিস আদালত, হাসপাতাল ও থানাতেও ঢুঁ মারা। অবশ্যই ছাত্রলীগের মতো মাস্তানি বা দুর্ব্যবহার করতে নয়। কাজে পেশাদার আচরণ করাও এভাবেই শিখতে পারবে। এখনো দেশের প্রচুর উন্নয়ন কাজ বাকি, সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা যায়। গার্মেন্টসগুলোতে গিয়ে ওরা দেখে আসতে পারে, ওদের মালিক ঠিকমতো বেতন বোনাস সব দেয় কি না, অতিরিক্ত খাটায় কিনা! এমন বর্ষায় সবাই মিলে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করতে পারে। গণপরিবহনগুলো নারীবান্ধব কিনা? দেশের কোন কোন জায়গায় পাবলিক টয়লেটের প্রয়ো⛎জনীয়তা রয়েছে, সেই তালিকাও করতে পারে। শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান করলেই হবে না, এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও বিজ্ঞানসম্মত ও পরিবেশবান্ধবভাবে করার উপায় বের করতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাছ থেকে দলবদ্ধভাবে অগ্নিনির্বাপণ সম্পর𓂃্কে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে আসতে পারে, যেন কোনো অগ্নিকাণ্ডে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারে। থানাগুলো আবার সাজানোর জন্য এখন ওদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে (তবে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রর গোপনীয়তা রক্ষা করে)।
কাজ করতে চাইলে কাজের কিন্তু অভাব নেই। প্রচুর কাজ রয়েছে। তাই শুধু ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাজ নিয়েই পড়ে থাকলে হবে না। চোখ খুলে একটু তাকাতে হবে। আর বড়দেরও ওদের কাজের জন্য সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব রাখতে হবে। হ্যাঁ, ওরা ছোট, একটা কাজ করতে গিয়ে আরও ১০টা ঝামেলা পাকাবে, তবু কেউ নিজ থেকে কাজ/সহযোগিতা করতে চাইলে, সামান্য উৎসাহ দেওয়াই উচিত। এত দিন তো এভাবে কাজ করার সুযোগ ওদের বা আমাদের কারোরই ছিল না। এবার না হয় কাজে লাগুক। এভাবেও মানুষের মতো মানুষ হওয়া যায়। আর তꩲাতে দেশেরই কল্যাণ।