সাম্প্রদায়িক হামলাকারী ও চক্রান্তকারীদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। একই সঙ্গে এসব দাবি জানিয়ে রাজধানীর শাহবাগে ‘গণঅনশন ও গণঅবস্থান’ কর্মসূচি শেষ করেছে সংগঠনটি। পাশাপℱাশি তিন দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সকাল ৬টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণঅনশন, অবস্থান ও বিক্ষোভ' কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানান তারা।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো- সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল মন্দির, বাড়িঘর পুনঃনির্মাণ, গৃহহীনদের পুণর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করাসহ আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে অন্যুন ২০ লক্ষ টাকা প্রদান বিকল্পে প্রতিটꦿি পরিবারের সদস্যদের একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করা; নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক হামলাকারী ও তাদের পেছনে থাকা চক্রান্তকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিশেষ ক্ষমতা আইন, সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় এনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুততম সময়ে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা; সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের রোধে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা সত্ত্বেও প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে যারা দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও অবহেলা করেছেন তাদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা; সামাজিক গণমাধ্যম ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছাড়াও সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া; প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা সত্বেও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় যেসব প্রতিনিধি এগিয়ে আসেননি তাদেরকেও চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক রাজনৈতিক পদক্ষেপগ্রহণ করা; ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সংগঠিত সাম্প্রদায়িক ঘটনাবলি তদন্তে সুপ্রীম কোর্ꩲটের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনায় গঠিত সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট অনতিবিলম্বে জনসমুক্ষে প্রকাশ ও এর সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইনের দ্রুত বাস্তবায়নসহ ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছে প্রদত্ত অঙ্গিকার দ্রুত বাস্তবায়ন করা।
এদিকে আজ সকাল ৬ টা থেকে শাহবাগে এই কর্মসূচি শুরু করে। দুপ🍎ুর সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে অনশন করার পর প্রায় ১ ঘণ্টা শাহবাগ মোড় আটকে রাখে বিক্ষোভকারীরা। এসময় শাহবাগ মোড়ের চারপাশে রাস্তায় তীব্র যানযট তৈরি হয়। সাড়ে ১২ টার দিকে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির এসে অনশনকারীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করেন। এরপর বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচিꦑ শেষ করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ করা হয়।
এছাড়া দাবি পেশ করে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানিয়ে মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, “আমাদের দাবিসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনায় রাখা হবে। প্রয়োজনে পরবর্তীতে এসব দাবি সমর্থনে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে- 'চল চল ঢাকায় চল' স্লোগানে ঢাকায় সমবেত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
মনীন্দ্র কুমার আরও বলেন, “আমাদের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির প্রতিটি সংগঠন পৃথক পৃথকভাবে ও যৌথভাবে জনসংযোগ ও প্রতিবাদী কর্ম🏅সূচি এগিয়ে নেবে।”
এছাড়াও এই কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি),বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতি, জ⛦ন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, মাইনরিটি রাইটস ফোরামের বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম ও হিন্দু ছাত্র ফোরাম, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংরক্ষণ সমিতি, ইন্টারন্যাশনাল শ্রী শ্রী হরি গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, জাতীয় আদ💃িবাসী পরিষদ সংহতি জানিয়ে অংশ নেয়।