জাপান যেতে চেয়েছিল সেই ৩ কলেজছাত্রী: র‌্যাব

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১, ০৮:৪৪ পিএম

উন্নত ও স্বাধীন জীবনযাপনের জন্য জাপান যে🅠তে ঘর ছেড়েছিল রাজধানীর পল্লবীর সেই তিন কলে✅জছাত্রী।

পরিবারের প্রতি বিরক্তি। এছাড়া করোনাকালে ঘরে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অপসংস্কৃতিতে আসক্তি। দিন দিন আগ্রহꩲ হারিয়ে ফেলেছিল লেখাপড়ার প্রতিও। তাই ঘরᩚᩚᩚᩚᩚᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ𒀱ᩚᩚᩚ ছেড়েছিল তারা।

তাই তারা কক্সবাজার থেকে নৌপথে জাপানে পাড়ি জমানো🐈র প♉রিকল্পনা করেছিল। তবে দেশ ছাড়ার আগেই তাদের উদ্ধার করে র‍্যাব।

র‌্যাব জানায়, ওই তিন কলেজছাত্রী মিরপুরের স্থানীয় কলেজে লেখাপড়া করত। করোনাভাইরাস মহামারিতে দ🌺ীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তারা। দিন দিন লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর ফলে তাদের পরিবার পড়াশোনা ও ধর্মীয় বিধান মেনে চলার জন্য চাপ দিত। অতিরিক্ত পারিবারিক বিধিনিষেধের ফলে তারা বিরক্ত হয়ে পড়ে।

র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক ꦦবলেন, “তাদের নিজেদের পরিবারের নিয়মকানুন ভালো লাগত না এবং এসব সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়মকানুন তাদের কাছে অত্যাচার মনে হতো। তারা মূলত উচ্চাভিলাষী জীবনযাপন পছন্দ করত। দীর্ঘদিন বাসায় আবদ্ধ থাকার সময় তারা পশ্চিমা সংস্কৃতি, বিশেষ করে জাপানি সংস্কৃতির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে♒।”

মোজাম্মেল হক বলেন, “তারা অধিক পরিমাণে জাপানি সিনেমা-সিরিয়াল, সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম দেখে দেখে জাপানি ভাষা কিছুটা আয়ত্ত করে নেয়। তারা দেশ ছেড়ে স্বাধীন জীবনযাপন ও উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে জাপান যাওয়ার পরিকল্পনা করার কারণ হিসেবে জাপানি সংস্কৃতিতে নারী-পুরুষের সম-অধিকার, স্বাধীনতা, দত্তক নেয়ার সুযোগ এব𝕴ং অন্যান্য ধর্মীয় ও সামাজিক বিধিনিষেধ না থাকার কারণ উল্লেখ করে।”

র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম꧑্মেল হক আরও জানান, হাফসার পরামর্শে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা নিজেদের ই-মেইল, ফেসবুক ও ব্যবহৃত মোবা🃏ইল গাবতলীতে নষ্ট করে ফেলে। এটা করার অন্যতম কারণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন তাদের অবস্থান চিহ্নিত না করতে পারে। এরপর তারা বাসে কুমিল্লা ময়নামতি যায়। পথিমধ্যে তারা নিজেদের পরিচয় গোপনের উদ্দেশ্যে নিজেদের চুল কেটে ফেলে এবং পশ্চিমা বেশভূষা ধারণ করে। কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় পৌঁছে তারা কেডস্, পোশাক ও একটি মোবাইল কেনে। কিন্তু মোবাইল কিনলেও তারা সিম না কিনে ওয়াইফাই ব্যবহার করে।

এদ🐟িকে গত ২ অক্টোবর রাতে নিখোঁজ শিক্ষার্থী দিলখুশ জান্নাত নিশার বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন। 

মামলায় তিনি আসামি করেন মো. তরিকুল্লাহ (১৯), মো. রকিবু♏ল্লাহ (২০), জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ (১৮) ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়নকে (১৮)।

এ ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। র‍্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ও কক্সবাজ🐠ারে থাকা র‍্যাব-৪ এর টিমের মাধ্যমে জানতে পারে, নিখোঁজ তিন তরুণী মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ছদ্মবেশে কক্সবাজার থেকে বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রাওনা দিয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আবদুল্লাহপুরের বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে নিখোঁজদের উদ্ধার করে।

‘দুই মাস আগে তিন🔥 বান্ধবী তরিকুলের সঙ্গে দিয়াবাড়ী এলাকায় ঘুরতে গিয়ে হাফসা চৌধুরী নামে এক নারীর সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। ওই নারীর ꧃সঙ্গে আলোচনার একপর্যায়ে তারা জাপানে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানায়। হাফসা চৌধুরী তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের জন্য ফেসবুকে বন্ধু হয়। মেসেঞ্জারে নিয়মিত চ্যাটিংয়ে তারা হাফসার সঙ্গে কক্সবাজার রুট দিয়ে নৌপথে জাপান যাওয়ার পরিকল্পনা করে। সেই উদ্দেশ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।’

র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডি༺আইজি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাসা থেকে বেরিয়ে তারা প্রথমে গাবতলী যায়। সেখানে নিজেদের মোবাইল ও ফেসবুক নিষ্ক্রিয় করে। পরে নৌকাযোগে নদী পার হয়ে আমিনবাজার এলাকায় গেলে হাফসার দুজন লোক কালো রঙে💫র নোহা গাড়িতে তাদের অজ্ঞাত একটি জায়গায় নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে সিএনজিযোগে তাদের কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চট্টগ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।’

র‍্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, “তিন বান্ধবী তাদের কথামতো কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে চট্টগ্রামগামী কোনো ট্রেন না পেয়ে বাসে কুমিল্লার ময়নামতি যায়। পথে তারা নিজেদের পরিচয় গোপনের উদ্দেশ্যে ও পশ্চিমা সংস্কৃতির আদলে নিজেদের চুল কেটে ফেಌলে পশ্চিমা বেশভূষা ধারণ করে। কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় পৌঁছে তারা কেডস, পোশাক ও একটি মোবাইল কেনে। সেখান থেকে তারা পুনরায় বাসযোগে চট্টগ্রাম সিনেমা প্লেস বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দুটি মোবাইল কিনে বাসে কক্সবাজারে পৌঁছায়।”

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “মোবাইল কিনলেও আত্মগোপনে থাকার জন্য তারা কোনো সিম কেনে না। ১ অক্টোবর কক্সবাজার পৌঁছে তারা ৫ অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজারের কলাতলির একটি হোটেলে অবস্থান করে ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার করে। এরপর ২ অক্টোবর কক্সবাজার সি-বিচ এলাকায় বেড়াতে গেলে হাফসার লোক পরিচয়ে আসিফ ও শফিক নামের দুজন তাদের কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ও কিছু নগদ টাকা নিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তারা ꦜআতঙ্কিত হয়ে হোটেলে অবস্থান নেয় ও হোটেলের আশপাশে র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ৫ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে ছদ্মবেশে বাসে কক্সবাজার থেকে রওয়ানা হয়। সেখান থেকে তারা ঢাকার আব্দুল্লাহপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছালে র‍্যাবের একটি দল তাদের উদ্ধার করে র‍্যাব-৪ কার্যালয়ে নিয়ে আসে।”

এছাড়া হাফসা নামের নারীকে শনাক্তের ব্যাপারে র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, “হাফসার কোনো মোবাইল নম্বর অথবা অন্য তথ্য না থাকায় এখন পর্যন্ত তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে হাফসা ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্ꦐযাহত রেখেছে র‍্যাব।”

অন্যদিকে উদ্ধার তিন ছাত্রীকে পরিবারের উপস্থিতিতে পল্লবী থানায় হস্তান্তরের প্ܫরক্র💟িয়া চলছে বলেও জানান র‍্যাবের এ কর্মকর্তা।