কানাডায় পালানোর পরিকল্পনা ছিল আশীষের : র‌্যাব

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২২, ০৩:০৮ পিএম

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আশীষ রায় চৌধুরীকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র&🔯zwnj;্যাব। এ সময় ২২ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল সোডা ওয়াটার, ১টি আইপ্যাড, ১৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, ২টি আইফোন ও ২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার রাতে গুলশানের পিংক সিটির পাশে ১০৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ি ফিরোজ গ🎐ার্ডেন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। চলতি মাসের ৭ এপ্রিল আশীষ রায় চৌধুরীর দেশ থেকে পালিয়ে ক🍒ানাডায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে জানায় র‍্যাব।

জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় গত ২৮ মার্চ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জা🌸রি করেন আদালত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আশীষ রায় সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।

বুধবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কꦺমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, “১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ🧜 কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন।”

২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ওই বছরই আসামিদের মধ্যে আদনান সিদ্দিকী দুই বছর পর হাইকোর্টে রিট করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। পরে হাইকোর্꧋ট বেঞ্চ ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট আবার আরেকটি রায় দেন। এই রায়ে আগের জারি করা রুল🎶টি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রত্যাহার করা হয় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ। পরে আদালত ২৮ মার্চ ২০২২ অনুপস্থিতির কারণে তাদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে বনানীর আবেদীন টাওয়ারে গ্রেপ্তার আশীষ রায় চৌধুরী ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌথ মালিকানায় ৫০ লাখ টাকার পুঁজি নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ লাখ টাকা লগ্নি করেছিল আশীষ রায় এবং বাকি ২৫ লাখ টাকা লগ্নি করেছিল পলাতক বান্টি ইসলাম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ক্লাবে বিভিন্ন বয়সী মানুষ সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য আসতেন। ট্রাম্পস ক্লাবটি সব আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন এবং গ্যাং লিডারদের একটি বিশেষ আখড়ায় পরিণত হয় এবং এখানে সবচেয়ে বেশি যাতায়াত ছিল আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের। আজিজ মোহাম্মদ ভাই মূলত ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চক্রগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মিটিং বা তা💙দের পরিচালনা করার জন্য সেই ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত করতেন এবং সেই ক্লাবকে ব্যবহার করতেন। সেই সুবাদে ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে তার সখ্য তৈরি হয়। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ভাতিজিকে বান্টি ইসলাম বিয়ে করার সুবাদে তাদের মধ্যে একটি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল এবং বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় যুবক বয়স থেকে একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পরে তাদের এই বন্ধুত্ব ব্যবসায়িক অংশীদারত্বে রূপ নেয় এবং একসঙ্গে পার্টনারশিপে ট্রাম্পস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে পরিচালনা করা শুরু করেন। আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরী একসঙ্গে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড ও অপরাধ জগতের ব্যক্তিদের সঙ্গে ;জড়িত থেকে এই ধরনের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।”

র‌্যাব কমান্ডার আরও বলেন, “বনানীর আবেদীন টাওয়ারের আটতলায় অবস্থিত ট্রাম্পস ক্লাবের ঠিক পাশেই ছিল ওই সময়কার বনানীর সবচেয়ে বড় মসজিদ বা বনানীর জামে মসজিদ। ওই ট্রাম্পস ক্লাবে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সারা রাত বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। ভিকটিম চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী বনানী মসজিদ কমিটি নি🌠য়ে বারবার ট্রাম্পস ক্লাবের এই ধরনের অশ্লীলতা বন্ধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কিন্তু ভিকটিম সোহেল চৌধুরী যে মসজিদ কমিটি নিয়ে এই ট্রাম্পস ক্লাবের অশ্লীলতা ও অসামাজিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, এই কারণে ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বাল্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর ব্যবসায়িক স্বার্থে মারাত্মকভাবে আঘাত হানে। অপর দিকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আন্ডারওয়ার্ল্ড যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য ঢাকায় ট্রাম্পস ক্লাবকে সেইফ হাউস হিসেবে বেছে নিয়েছিল, তার সেই স্বার্থেও আঘাত লাগে। এ ছাড়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনও অসামাজিক কার্যকলাপ করতে একমাত্র সেইফ হাউস পেয়েছিলেন ওই ক্লাবটিকে। সে সময়ে যদি ক্লাবটি বন্ধ হয়ে যেত তাহলে তারা সবাই ক্ষতির সম্মুখীন হতেন। ফলে সোহেল চৌধুরী হত্যার শিকার হন।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আ♌ছে বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।