পৌরসভায় প্রশাসকের বিধান রেখে বিল পাস

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২২, ০৬:০২ পিএম
ফাইল ছবি

দেশের পৌরসভꦫার নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসক নি🃏য়োগের বিধান যুক্ত করে পৌরসভা আইনের সংশোধনী পাস হয়েছে। সংশোধনীতে পল্লী এলাকাকে শহর ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্বের শর্ত বাড়ানোর বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

এর আগের ♓বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) বিল-২০২২ ꧋সংসদে 𒆙পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এ সময় বিলটি পাসের প্রতিবাদে বিএনপির সওংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ওয়াকআউট করেন। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি সংসদ কক্ষে আবার ফিরে আসেন।

সংসদ সদস্য হারুন বিলটির সংশোধনীর কয়েকট🧸ি বিষয়ে ব্যাখ্যা দাবি করেন, প্রত্যাশিত জবাব না পাওয়ায় তিনি ওয়াকআউট করেন।

বিদ্যমান আইনে বলা আছে, পৌরসভা ঘোষণা করতে হলে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে গড়ে দেড় হা✤জার হতে হবে। এ রকম হলে হবে না। সংশোধনে তা বাড়িয়ে দুই হাজার করা হয়েছে। এছাড়া বিলে পৌরসভার সౠচিবের পদের নাম বদলে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ করা হয়েছে।

বিদ্যমান আইনের ৪♛২(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো শহর এলাকাকে পৌর এলাকা ঘোষণার পর পৌরসভার কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করিবে এবং পৌরসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত উক্ত প্রশাসক প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন।

বিদ্যমান আইনের মেয়র ও কাউন্সিলদের অপসারণ সংক্রান্ত ধারণায় নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ধারা ‘ঝ’ যুক্ত করে বলা হয়েছে। এতে বল🎶া হয়েছে, মেয়র অথবা কাউন্সিলর তার নিজ পদ হইতে অপসারণযোগ্য হবেন, “সরকার কর্তৃক, সম༺য় সময়, প্রদত্ত নির্দেশ পালন করতে ব্যর্থ হন।”

বিলে এ ধারার পরিবর্তন আনা হয়েছে; এতে বলা হয়েছে, পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন পরিষদ গঠ♋নের আগ পর্যন্ত কাজ চালানোর জন্য প্রশাসক নিয়োগ দেবে সরকার। সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা সরকাꦆর উপযুক্ত মনে করে- এমন কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ দেবে।

বিলে পৌরসভার পরিষদ বাতিল সংক্রান্ত ধারায় নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্রমাগতভাবে ১২ মাস বেতন ব🌄কেয়া থাকলে পরিষদ বাতিল হবে।

নতুন পৌরসভা গঠন হলে বা কোনো ইউনি🌌য়নের অংশবিশেষ পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হলে বিলুপ্ত ইউনিয়ন বা বিলুপ্ত অংশে কর্মরতদের পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে বিলে।

এছাড়া বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, “জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত জীবন ও পর্যাপ্ত নাগরিক সেবার প্রত্যাশায় অধিক সংখ্যক মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। একইসঙ্গে শহর এলাকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। নতুন নতুন অনেক পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর দেখা যায় যে, পৌরসভার নাগরিকসেবা ⛦প্রদান এবং নিজস্ব প্রশাসন পরিচালনার সক্ষমতা থাকে না। সুশাসন নিশ্চিত ও পর্যাপ্ত সেবা প্রদানের শহরগুলোকে বাসযোগ্য ൩করতে শহর গঠনে জনসংখ্যার ঘনত্বের মান পরিবর্তন প্রয়োজন।”

বিদ্যমান আইনে পৌর𓆏সভাসমূহের মেয়াদ পাঁচ বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন পরিষদ🤪 প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত, পূর্বের পরিষদ দায়িত্ব পালন করতে পারে। অনেক সময় পৌরসভার মেয়াদ শেষ হলেও বিভিন্ন কারণে রিট মামলা বা অন্য কোনো মামলা করে মেয়াদোত্তীর্ণ পরিষদ অনির্ধারিত সময়ের জন্য পৌর প্রশাসন পরিচালনা করে। ফলে আইনের এ শর্তটি সংশোধনক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভার ক্ষেত্রে নতুন পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক নিয়োগ করা প্রয়োজন।

এদিকে বিলটি নিয়ে আলোচনার সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “সংবিধানে বলা হয়েছে নির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা স্থানীয় সরকার পরিচালিত হবে। প্রশাসক নিয়োগের বিধান সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। নতুন পৌরসভা গঠনের পর প্রথমবার নির্বাচনের আগে একজন প্রসাশক নিয়োগ করা যেতে পারে, সেটা জরুরি প্রয়োজনে। আমলাতন্ত্র দিয়েই যদি কাজ হতো তাহলে স্থানীয় স🅘রকারের কোনো প্রয়োজন ছিল না।”

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুল൲ো ক্যানসারে আক্রান্ত। স্থানীয় সরকারগুলোর একটি বিরাট অংশের প্রতিনিধি বিনাভোটে নির্বাচিত, বিরাট অংশ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে নির্বাচিত। স্বাধীনꦦতার ৫০ বছর পর মানুষ এমন স্থানীয় সরকার আশা করেনি।”

হারুনুর রশীদ বলেন, “সংবিধানে সব পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কথা বলা আছে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে না পারলে সেটার জন্য সরকার দায়ী। প্রতিন🥂িধিদের সরিয়ে দিয়ে সরকারদলীয় লোকদের বসানোর জন্য এটি করা হচ্ছে। তিনি এটাকে ‘বাকশালী পদ্ধতি’ চালুর চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন।”

এমপি হারুন আরও বলেন, “জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এখন আꦏওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচি পালন করছে। জনগণকে সেখানে অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভিন্নমতের কেউ সেখানে না গেলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে, এ উদ্দেশ্যে এ আইন করা হচ্ছে।”

জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “জনগণ, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্নজনের মতামত নিয়ে আইনে সংশোধনী আনဣা হচ্ছে। প্রশাসক নিয়োগের বিধান রাখার বিষয়টি যৌক্তিক। বিভিন্ন কারণে অনেক সময় নির্বাচন করা নিয়ে আইনগত জটিলতা তৈরি হয়। অনেকে এর সুযোগ নিয়ে থাকেন।”

সচ🤪িব পদটিকে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ নামকরণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “ম♏ন্ত্রণালয়ে সচিব থাকেন। এ পদটি নিয়ে অনেক সময় সংশয় দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে এ পদের অপব্যবহারও দেখা গেছে।”

অন্যদিকে বিলটি পাস হওয়ার পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক স্পিকারের কাছ থেকে সময় নিয়ে বিএনপির এমপি হারুনের বক্তব্যের জবাব দেন। এ সময় হারুনের ওয়াকআউটকে ‘স্ট্যানবাজি&r🐼squo; আখ্যা দিয়ে আইনমন্ত্র꧑ী বলেন, “হারুন আইনটি পুরোপুরি পড়েননি।”