এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে লঞ্চটির ইঞ্জিনকক্ষকেই। যেখানে কিছুদিন আগেই বসানো হয় নতুন দুটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন। অগ্নিকাণ্ডের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গঠিত আলাদা দুটি তদন্ত কমিটির সদস্যরা এমন ইঙ্গিতই দিয়🐻েছেন গণমাধ্যমের কাছে।
এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের জন্য সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌ-মন্ত্রণালয়। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকেও গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি। শ🔜নিবার (২৫ ডিসেম্বর) তদন্ত কমিটির সদস্যরা পুড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরিদর্শনে যান। এতে নেতৃত্ব দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তোফায়েল আহমেদ।
পরিদর্শনের🎀 সময় তদন্ত কমিটির সদস্যরা লঞ্চটির ইꦗঞ্জিনের ৩ নম্বর ইন্ডিকেটর কাভারের একটি নাট ঢিলে পান। এছাড়া ইঞ্জিনের ৬ নম্বর সিলিন্ডারের হেড ভাঙা দেখতে পান। এর থেকে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন ইঞ্জির কক্ষের ত্রুটি থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটেছে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান তোফায়েল আহমেদ বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ইঞ্জিন কক্ষ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে এখনই এ বꦯিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না। কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে এবং আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লঞ্চটির ইঞ্জিন রি-কন্ডিশন ছিল। গত অক্টোবর মাসেই নতুন করে দুটি ইঞ্জিন লাগানো হয়। তবে নতুন ইঞ্জিন লাগানোর বিষয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে কিছুই জানায়নি লঞ্চ কর🅷্তৃপক্ষ। এদিকে নতুন ইঞ্জিন লাগিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচ📖লের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পরিবহন করছিল ‘এমভি অভিযান-১০’। যার কারণে জীবন দিতে হলো বহু মানুষকে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চটি বিলাসবহুল হলেও এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম ছিল না। যাত্রীদের আমোদ-প্রমোদের সব রকমের সরঞ্জাম থাকলেও ছিল না পর্যাপ্ত বয়া ও অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র। সব মিলিয়ে পুরো লঞ্চে বয়া রাখার স্থান ছিল মাত্র ৮০টির মতো। সেগুলোও রাখা ছিল অন্তত ১২ ফুট উচ্চতায়। এছাড়া পুরো লঞ্চে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র পাওয়া গেছে মাত্র তিনটি। এতেই ধারণা করা যায়, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাꦫত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে কতটা উদাসীন ছিল।
এদিকে, লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায়𒁏 চার মালিকসহ আট জনের বিরুদ্ধে নৌ আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলার পর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রোববার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন নে🔴ৗ আদালতের বিচারক (স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট) জয়নাব বেগম। এর আগে দুপুরে মামলাটি করেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন- লঞ্চটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক মো. হামজালাল শেখ, ম🐼ো. শামিম আহম্মেদ, মো. রাসেল আাহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচജল অধ্যাদেশ ১৯৭৬ (সংশোধনী ২০০৫)–এর ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র না থাকা, জীবনরক্ষাকারী পর্যাপ্ত বয়া ও বালুর বাক্স না থাকা, ইঞ্জিনকক্ষের বাইরে অননুমোদিতভাবে ডিজেল বোঝাই অনেক ড্রাম রাখা এবং রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার রাখার অ🎃ভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ম🧸াঝরাতে ঝালকাঠির স♏ুগন্ধা নদীতে আগুন লেগে পুড়ে যায় ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচলকারী বিলাসবহুল লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’। এতে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি হয়েছে ৪১ জনের। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বহু যাত্রী।