শতবর্ষে তেরশ্রী কালী নারায়ণ ইনস্টিটিউশন

লিটন মিয়া, মানিকগঞ্জ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২, ১০:৪৩ এএম

ইতিহাস ও গৌরবের শতবর্ষে পদার্পণ কর𒐪েছে মানিকগঞ্জ জেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ তেরশ্রী কালী নারায়ণ (কে. এন.) ইনস্টিটিউশন। ১৯২২ সালে 🐲প্রতিষ্ঠিত এ স্কুলটি ২০২২ সালে শতবর্ষে পা রেখেছে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী অঞ্চল ব্রিটিশ আমল থেকে শিক্ষা-দীক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর ছিল। এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ। এসব আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন তেরশ্রী কালী নারায়ণ বহুমুখী ইনস্টিটিউ�📖�শন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এই স্কুলটি তৎকালীন মহকুমার একটি বিখ্যাত স্কুল। ভারত উপমহাদেশের বিখ্যাত বিপ্লবী প্রমথ নাথ নন্দীর নামের সঙ্গে স্মৃতিবিজড়িত প্রতিষ্ঠানটি। প্রমথ নাথ নন্দী ‘রেড’ নন্দী নামে খ্যাত ছিলেন। তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বাংলা ও তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে তিনি এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২২ সালে। প্রতিষ্ঠাতা জমিদার সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায় চৌধুরী। শিক্ষার বিস্তারে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্রিটিশবিরোধী ও বামপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত ছিল এই স্কুল। ব্রিটিশ সরকার স্কুলট𝓀ি ‘Hot Belt Of Communism’ নামে আখ্যায়িত করেছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন ফ্যাকাল্টির ডিন আব্দুস সালাম এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। খেলাধুলা ও সংস্কৃতি বিস্তারের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকার দাবিদার।

১৯৪৮ সালে ঢাকার বাইরে মাতৃভাষার দাবিতে প্রথম যে আন্দোলন সংঘটিত হয়, তা মানিকগঞ্জের তেরশ্রী অঞ্চলে। তেরশ্রী স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লবী প্রমথ নাথ নন্দী তেরশ্রীতে প্রথম জনগণকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। 🍒এ🌳রপর স্কুলের শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা দাবিতে সভা মিছিল করে এবং আন্দোলনকারী চারজন শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। চারজন ছাত্রই তেরশ্রী স্কুলের। তাঁরা হলেন মো. রেহাজ উদ্দিন (দশম শ্রেণির ছাত্র), যতীন দাস হাসি (ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী), নিরঞ্জন বিহারী বসু (নবম শ্রেণির ছাত্র) এবং ওয়াজউদ্দিন মল্লিক (নবম শ্রেণির ছাত্র)। 

ভাষা আন্দোলনে আরও দুজন ছাত্র গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তাঁরা হলেন কমরেড আব্দুল হাকিম (🎃ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী), পরবর্তী সময় তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন এবং আফছার উদ্দিন আহমেদ।

এ ছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধে এই স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অবদান রাখেন। যুদ্ধ চলাকালে এ স্কুলে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। ১৯৭১ সালে ২২ নভেম্বর গণহত্যায় ৪৩ জন নিহত হন। তাঁদের স্মরণে স্কুলটির পাশে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। 
 

আরও সংবাদ