বিএনপিকে নির্বাচনে চেয়েছিলেন আ. লীগ নেতারা, শেখ হাসিনার ‘না’

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিএন💛পিকে না আনা শেখ হাসিনার একটি ‘বড় ভুল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা মনে করেন🌳, বিএনপিকে নির্বাচনে আনলে আওয়ামী লীগই জিতত এবং দলও ক্ষমতায় থাকত।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গত এক সপ্তাহে কারও কারও সঙ্গে অজꦇ্ঞাত🌞 স্থানে দেখা করতে এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিশোধের শিকার হওয়ার শঙ্কায় আত্মগোপনে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানিয়েছে। 

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলের এক নেতা বলেন, “দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে🍸 যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনী তরিতে ওঠানো গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানো যেত। তাতে আমরাই আবার🥃 জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।”

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সূত্রগুলো বলেছে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে লন্ডনে বিএনপির ♒চেয়ারপারসন ও সাবেক🧔 প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন।

একটি সূত্রের ভাষ্যমতে, “আড়ালে থাকা একটি চ্যানেলের মাধ্যমে প্রস্তাবও দেওয়া হয় (ꦅবিএনপিকে নির্বাচনে আনার)। আমাদের ধারণা, তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় চ্যানেলটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের এক বছর আগেই ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়...কিন্তু শেখ হাসিন🥀া ওই প্রস্তাবে সবুজসংকেত দেননি।”

আওয়ামী লীগের একজন নেতার বক্তব্য, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি শেখ হাসিনার🗹 প্রত্যাখ্যান করা ছিল ‘সাংঘাতিক ভুল’। কেননা, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে বিরোধীদের রাগ–ক্ষোভ হয়তো মিটে যেত।

ওই নেতা আরও বলেন, “দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনꦇগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনী তরিতে ওঠানো গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানোও যেত। তাতে আমরাই আবার জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।”

নেতা–কর্মীরা মনে করেন, বিশেষ করে জানুয়ারির নির্বাচনে জেতার পর শেখ হাসিনা আরও একগুঁয়ে হয়ে ওঠেন ও কোনো পরামর্শ শোনেননি। এ প্রসঙ্গে ওই নেতা বলেন, “টানা চতুর্থবার জিতে তিনি (হাসিনা) অত🏅ি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং কোটা সংস্কার নিয়ে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে সৃষ্ট ক্ষোভের মা🍸ত্রা বুঝতে ব্যর্থ হন।”

সূত্রগুলো বলেছে, কৌশলে কিছু নেতা শেখ হাসিনাকে জুলাইয়ের শুরুতে ছাত্র বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। (হ🎃াসিনা সরকারের) কফিনে শেষ পেরেকটি বসে তখন, যখন একই𝐆 মাসে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা ছাত্রনেতাদের তুলে নিয়ে যান এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে ও আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারে জোরপূর্বক প্রতিশ্রুতি আদায় করে ছেড়ে দেন।

এ কৌশল হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায়। কর্মসূচি প্রত্যাহার𓆉ে কীভাবে জোরপূর্বক প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়ে🔜ছে, ছাত্রনেতারা সেই বিষয় জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেন। এটি পরপর কিছু ঘটনার সূত্রপাত ঘটায় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

শেখ হাসিন𝄹ার পতনের পর জীবনাশঙ্কায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা–কর্মী ও বুদ্ধিজীবী দেশজুড়ে বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেন।

আশ্রয় নেওয়া এই ৬২৬ জনের মধ্যে ছিলেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। তাদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা, ৫ 𝐆জন বিচারক, বেসামরিক প্রশাসনের ১৯ কর্মকর্তা, ২৮ পুলিশ কর্মকর্তা, ব﷽িভিন্ন পদের ৪৮৭ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ নানা পেশার ১২ জন ও ৫১টি পরিবার।

ঘটনাচক্রে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্🦹টাকালে আটক হন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপন করেছেন, কেউবা গ্রেপ্তার হয়েছেন। নেতারা বলছেন, ৭৫ বছরের পুরোনো যে দল টানা ১৫ বছরের বেশি দেশ শাস🍰ন করেছে, তারাই এখন অস্তিত্ব সংকটে।

এদিকে দল গোছানোর ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের প্রথম পদক্ষেপ প্রসঙ্গে আওয়া🅺মী লীগের নেতাদের একজন বলেন, “দলকে পুনর্গঠনে তাকে (হাসিনা) তৃণমূল পর্যায়ের লোকজন বাছাই করতে হবে, তাদের মধ্যে থাকবেন কিছু তরুণ আওয়ামী নেতা; মাঠপর্যায়ে যাঁদের ব্যাপারে মানুষের আস্থা আছে, লোকজনের সঙ্গে যাঁদের যোগাযোগ আছে এবং অবশ্যই পরিবারের (হাসিনা) প্রতি অনুগত...এ যাত্রা দীর্ঘ হবে।”

এ নেতা আ🧜রও বলেন, “আমাদের শক্ত ঘাঁটি ও কর্মী বাহিনী রয়েছে। অনেকে বিপথগামী হয়েছেন, যেমনটা ঘটেছে সুবিধাবাদীদের ক্ষেত্রে। সমর্থকদের মধ্যেও এমনটা থাকবে। কিন্তু আমাদের অন্তত এমন কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী থাকা দরকার; যারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে ও নির্বাচন যখনই হোক, তাতে অংশ নেবে। এখন এটাই প্রয়োজন।”

এ পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভীর মতো কয়েকজন নেতার ভূমিকার দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে থাক💃াকালে ও তারেক রহমান বিদেশে অবস্থানকালে বিএনপির দুর্গ সামলেছেন তারা।

দেশে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী𒉰 লীগবিরোধী মনোভাব বিরাজ করায় শেখ হাসিনার পরিবার ও এর উত্তরসূরি সজীব ওয়াজেদ জয়ের খুব কম বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির নেতারা।

আওয়ামী লীগের নেতাদের একজন বল෴েন, “লোকজন এখনো ক্ষেপে আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাঁদের সময় দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার বা বিএনপি কিংবা জামায়াতের নেতৃত্বাধীন সরকার যে–ই কয়েকটা বছর ক্ষমতায় থাকুক, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের আবার সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবতে হবে।”