অর্থনৈতিক সংকটে ‘সতর্ক’ বাজেট

মো. মির হোসেন সরকার প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম
বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ছবি : সংবাদ প্রকাশ গ্রাফিক্স

ডলার সংকট, খেলাপি ঋণ এবং মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে দেশের অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এমন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। এদিন বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রীর এটꦰি প্রথম বাজেট। ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উনܫ্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারের বাজেট।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। 🍸বিভিন্ন সময় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকা𓆏র নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তবে সেসব পরিকল্পনার শতভাগ সফলতার মুখ দেখেছি। তাই সংকটে আসন্ন বাজেট ঘোষণায় বেশ সতর্ক সরকার। এবারের বাজেট প্রণয়ন অন্য সময়ের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে দাবি অর্থনীতিবিদদের।

তারা বলছেন, বাংলাদেশের মতো একদিকে সীমিত সম্পদ, অন্যদিকে দ্রুত উন্নতির আকাঙ্ক্ষা পোষণকারী একটি দেশের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে এবার এমন কিছু চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে, যেগুলো ꦐঅন্তত গত ১০ বছরে দেখা যায়নি। ফলে এবারের বাজেট প্রণয়নে যে কোনো সময়ের চেয়ে একটু বেশিই চ্যালেঞ্জ।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইম🍃েরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, “বিশ্ব এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে একটা চ্যালেঞ্জিং সময়ে আসছে নতুন বাজেট। তাই খুব সাবধানে তৈরি করতে হবে। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে জাহাজের খরচ বেড়েছে, ফলে যে কোনো পণ্য আদান-প্রদান ও পরিবহনের খরচ বেড়েছে। যারা আমদানি ও রপ্তানি করে তাদের উভয়ের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।”

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করতে অর্থমন্ত্রীর জন্য ৩২৯ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তৃতা তৈরি হয়েছে। অতীতে এত বড় বাজেট বক্তৃতা আর প্রণয়ন করা হয়নি। তবে এই বিশাল বাজেট বক্তৃতা ৮২ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে পুরোটা পড়তে হবে না। তিনি তার এই বꦡাজেটের সারাংশ স্লাইডের মাধ্যমে সংসদ সদস্য♔দের সামনে উপস্থাপন করবেন। বরাবরের মতো এবারও বাজেটের প্রথমাংশে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে। কোভিড পরবর্তী ‘রাশিয়া-ইউক্রেন’ যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি হয়েছে বলা হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রিজার্ভ বাড়বে ও মূল্যস্ফীতি কমবে বলে আশা প্রকাশ করাও হবে।

এজন্য বাজেটে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়েছে। চ্যালেঞ্জগুলো হলো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ত🔥🐈েল, গ্যাস ও সারের ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান, ঋণ পরিশোধ, বেসরকারি বিনিয়োগ, রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বাড়ানো ও বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনা এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানো।

বাজেটের আকার : আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এটি চলতি বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। টাকার অংকে বাড়ছে ৩৫ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। যা চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছরে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করে সরকার। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা গত 𒁃অর্থবছর ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি ꦆ(মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং বাজেটে মূল্যস্ফীতি ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি : আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের আগ্রহ, বাজেটে খাদ্যপণ্যের দাম কমাতে কী পদক্ষেপ থাকছে। টানা ২২ মাস দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। খাদ্যপণ্য ওꦯ খাদ্যবহির্ভূত পণ্য উভয় খাতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার অব্যাহত আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেও তা বজায় রয়েছে।

সরকারি সংস্থ𓂃া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৪১ থেকে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করেছে। গত এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

নতুন বাজেটে জিডিপি : আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। টাকার অংকে এটি হতে পারে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতা🉐ংশ করা হয়। অবশ্য বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বড়জোর ৫ দশমꦜিক ৬ শতাংশ। প্রায় কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

বাজেটের আয় বা রাজস্ব আদায় : প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের প্রধান আয় হচ্ছে রাজস্ব আয়। নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪০🔯 হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে যা ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ শতাংশ। নতুন রাজস্ব প্রাপ্তির মধ্যে বরাবরের মতো এবারও বেশিরভাগ আয় করার দায়িত্বটি থাকবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এবার চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আয় করতে হবে এনবিআরকে। নন-এনবিআর থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি ๊টাকা। ফলে বড় অঙ্কের রাজস্ব আহরণের চ্যালেঞ্জ থাকছে আগামী বাজেটেও।

বাজেটের ব্যয় : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের প্রায় ৬৪ শতাংশ অর্থ পরিচালন ব্যয়ে বরাদ্দ রাখা হতে পারে। এর আগে কখনো পরিচালন ব্যয়ে এতো বেশ꧃ি হারে বরাদ্দ রাখা হয়নি। এছাড়া বাজেটের ১৪ শতাংশের মতো অর্থ ব্যয় হবে ঋণের সুদ পরিশোধে। ফলে উন্নয়ন ব্য🐼য়ে অর্থের বরাদ্দ দাঁড়াবে ২২ শতাংশের মতো।

বাজেটের ঘাটতি : আগামী বাজেটে ঘাটতি ধরা হবে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাত থেকে ঋ𝓀ণ নেওয়া হবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাত থেকে মোটা এক লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে এক লাখ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণ।

পাশাপাশি ব্যাংক-বহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৬ হাজার কোটি🀅 টাকা। সরকারি চাকুরেদের ‘জিপিএফ’ থেকে নেওয়া হবে আ🦂রও ৫ হাজার কোটি টাকা।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) : নতুন অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টা♔কা কমিয়ে এডিপির আকার করা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) তুলনায় ২০ হাজার কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হতে পারে। এ ছাড়া নতুন অর্থবছরে আসল পরিশোধে ব্যয় করা হবে ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা রয়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা।

কমেছে ভর্তুকি : আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৬৭🐻২ কোটি টাকা। সেখান থেকে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি কমছে ২৭ হাজার কোটি টাকা।

কমতে পারে করপোরেট করহার : শর্তসাপেক্ষে করপোরেট করহার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। উৎপাদনশীল খাতে তালিকাভুক্ত নয় এমন শিল্পে কর সাড়ে ২৭ শতඣাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা করা হতে পারে। তবে অন্য সব খাতে কর অপরিবর্তিত থাকবে। এ ছাড়া কৃষি উপকরণ আমদানিতে শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে বিত্তবানদের ওপর বাড়তি কর আরোপের পরিকল্পনা করছে এনবিআর। ১৬ লাখ টাকার বেশি বার্ষিক আয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ের করহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে। বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতি হ্রাস এবং শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ থেকে মূলধনি আয়ের ওপর কর ছাড় প্রত্যাহারের পরিকল্🌌পনাও করা হচ্ছে।

করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ছে না : আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ছে না। তবে করদাতার হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাস🌸েস🎃মেন্টের বিধান বাতিল করা হচ্ছে। এ জন্য বাজেটে আয়কর আইনে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে এনবিআর। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যক্তি ও কোম্পানি দুই শ্রেণির করদাতাই কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।

ব্যয় বাড়বে সুদ পরিশোধে : সুদ পরিশোধের জন্য আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বড় আকারের অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। রাজস্ব আদায় প্রত্যাশা মতো না হওয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন ব্যয় মেটানো-এসব ধরে নিয়েই সরকার বড় আকারের ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই ঋণের বিপরীতেই গুনতে হবে বড় অঙ্কের সুদ। বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ থাকবে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে দেশি ঋণের সুদ ১ লাখ ৮ হাজার কোটি এবং বিদেশি ঋণের সুদ ২০ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগের তুলনায় এ বরাদ্দ দ্বিগুণের কাছাকাছি। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বা꧙জেটে সুদ খরচ বাবদ ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।

অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো বলছে, অর্থবছর শেষে সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় আ⛎রও বাড়তে পার🌃ে।

পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ : সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। এ খাতের বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৪০ হাজার ৭৫১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, শিক্ষাখাত ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা, গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি ২৪ 🎃হাজা🦋র ৮৬৮ কোটি ৩ লাখ টাকা, স্বাস্থ্যখাতে ২০ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং কৃষিখাতে ১৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে : আগামী অর্থবছরে ফের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আসতে পারে। এই সুযোগ দেওয়া হতে পারে এক বছরের জন্য। দুই বছর আগে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেও🉐য়া হয়েছিল। কিন্ত🔴ু তেমন সাড়া না পাওয়ায় পরে এ সুযোগ বাতিল করা হয়। এর পরের বছর দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ এই সুযোগ নেয়নি। এক বছর বিরতির পর আগামী অর্থবছরে আবারও ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

বাড়ছে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী : আসছে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হবে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরা♓দ্দ ছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। নগদ সহায়তা, খাদ্যসহায়তা ও কর্মসৃজন, বৃত্তি, বিশেষ সহায়তা, বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তা, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ইত্যাদি বিষয়ে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতের আওতায় ১১৫টি বিষয় বা কর্মসূচি রয়েছে। বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

খাদ্যনিরাপত্তা ও কর্মসৃজন কর্মসূচিতে থাকছে ১১টি বিষয়। এ ছাড়া বৃত্তি বাবদ ৬টি, নগদ ও খাদ্যসহায়তা সংক্রান্ত ১৭টি, ঋণসহায়তার ২টি, বিশেষ সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠীর ১৩টি, বিভিন্ন তহবিল ও কর্মসূচি ৯টি এবং ৩৪টি উন্নয়ন কর্মসূচি বাবদ বরাদ্দ রাখার কথা বলা ♐হবে সামাজিক নিরাপত্ত✱া খাতে।

এক নজরে চলতি অর্থবছরের বাজেট : চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছরে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করে সরকার। তবে সংশোধিত পর্যায়ে বাজেটের আকার ৭ লাখ ১৪ হাজার🍌 ৪১৮ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়। ব্যয়ের আকার কমানো হয় ৪৭ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।

এছাড়া রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ কোটি টাকা ধরা হলেও পরবর্তীকালে সেখান থেকে ২২ হাজ🅷ার কোটি টাকা কমানো হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ, এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে।