গ্রাহকের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আকাশনীলের দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রোববার রাতে র্যাব-২ ও র্যাব-৮-এর যৌথ অভিযানে ফরিদপুর থেকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মশিউর রহমান এবং ঢাকা থেকে ও পরিচালক ইফতেখার উজ্জামান রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে ২টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ এবং ১টি প্রাই⭕ভেটকার জব্দ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে গ্রাহকরা প্রায় ৩০ কোটি টাকা পাবে বলে জানায় র্যাব।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জান♛ান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিܫচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানায়, প্রতিষ্ঠানটিতে প𝕴্রায় ৪০ জন অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ ছিল। তাদের মাসিক ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা বেতন দেওয়া হতো। কোম্পানির অর্থে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট কেনা হয়, যার বর্তমান মূল্য ৩ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে ২টি দামি গাড়ি ব্যবহার করেন তারা। এছাড়া কোম্পানির প্রায় ৪টি টাটা পিকআপ রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে ৪টি একাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।
কমান্ডার মঈন বলেন, “শুক্রবার (১৮ মার্চ) অর্থ আত্মসাতের অভ𝓰িযোগে এক ভুক্তভোগী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশনীল’-এর এমডি এবং ডিরেক্টরসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। এছাড়া আরও বেশ কিছু ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে। তারা জানায়, প্রতিষ্ঠানের এমডি এবং ডিরেক্টরের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে ভুক্তভোগীরা এ সংক্রান্ত বিষয়ে মানববন্ধন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।”
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, “বিভিন্ন সংস্থার সূত্রে প্রকাশিত বিপুল পরিমাণ অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারকৃতরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লোকসানি কোম্পানি, কোনো ব্যবসায়িক লাভ করতে পারেনি। গ্রাহকের অর্থ দিয়েই যাবতীয় ব্যয় ও খরচ নির্বাহ করা হতো। ফলে দেনাꦫ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।”
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “আকাশনীল পরিকল্পিতভাবে একটি পরিবার নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়িক গঠনতন্ত্র হিসেবে কাজ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আকাশনীলের কারসাজির মূলহোতা গ্রেপ্তার মো. মশিউর, যিনি প্রতিষ্ঠানটির এমডি এবং তার সহযোগী গ্রেপ্তার ইফতেখাইরুজ্জামান রনি (পরিচালক)। গ্রেপ্তার মো. মশিউর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ অধ্যায়নরত থাকাকালে একটি ব্যবসা করার প𝓀রিকল্পনা করে। ব্যবসা হিসেবে সে প্রথমে গার্মেন্টস থেকে বাতিল টি-শার্ট/গার্মেন্টস পণ্য এনে নিউমার্কেট এলাকায় বিক্রি করতেন।”
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ব্যবসায়িক অবকাঠামো সম্পর্কে মশিউর জানায়, তার মাথায় অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসার আইডিয়া এলে 🦩;অ্যামাজন, আলীবাবার মতো অন𒈔লাইনে ব্যবসার করার ইচ্ছা হয়। এরপর ২০১৯ সালে আকাশনীল কোম্পানি নামে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ তৈরি করে এবং ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে। প্রথমে তারা রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকায় একটি অফিস চালু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং কৃষকদের কাছ থেকে শাকসবজি কিনে অনলাইনে হোম ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবসা শুরু করে। তবে করোনা মহামারির কারণে তার ব্যবসা সচল রাখতে পারেননি। তিনি ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত ব্যবসা না করার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
গ্রেফ🦂তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।