কাঠের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয় ৪ কোটি টাকার ব্রিজে

কাশেম হাওলাদার, বরগুনা প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩, ১০:২৮ এএম

বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া বাজারসংলগ্ন খাকদোন নদের ওপর ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ব্রিজ। নির্মাণের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এক বছর। দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে তিন বছরে মূল ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। তবে এখনো হয়নি সংযোগ সড়ক। চলাচলের জন্য উভয় প্রান্তে নড়বড়ে কাঠের সিঁড়ি দিয়▨ে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সܫ্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই বৃষ্টিতে সিঁড়ি ব্যবহার করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত চারজন পথ𝓰চারী আহত হয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজ নির্মাণকাজে দীর্ঘসূত্রিতায় ঠিকাদারের খেয়ালখুশি আর তদারকি কর্তৃপক্ষের গাফিলতি কারণে তিন বছর ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের তথ্যমতে, বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া বাজারসংলগ্ন খাকদোন নদের ওপর ৩০ দশমিক ৪ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ নির্মাণে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭ টাকা ব্যয় ধরা হয়। ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজকে ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। কার্যাদেশ অনুসারে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিলের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ করা কথা ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে নির্মাণকাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কাজ শেষের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হলেও ঠিকাদার ব্রিজেജর কাজ শেষ করতে পারেননি। তৃতীয় দফায় কাজ শেষের মেয়াদ বাড়িয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত করা হয়।

ব্রিজটি সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, মূল ব্রিজের কাজ শেষে উভয় প্রান্তে সড়কের সঙ্গে কাঠের সিঁড়ি দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু কাঠের সিঁড়ি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে নারী বৃদ্ধ ও শিশুদের চলাচলের অনুপযোগী। ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সিঁড়ি পার হতে গিয়ে এ প🌠র্যন্ত নারী শিশুসহ চারজন ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কেওড়াবুনিয়া মাধ্য𒁏মিক বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, ঘটবাড়িয়া কলেজ, আয়লা কলেজ, গুদিঘাটা আলিম মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শ🔯িক্ষকদের চলাচলের জন্য এই ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়।

কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের সিংড়াবুনিয়া গ্রামের আবদুর রশীদ বলেন, “আমার স্ত্রী꧑ আলেয়া বেগম সিঁড়ি থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এখন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”

বরগুনা মহ🐻িলা কলেজের ছাত্রী নুসরাত জাহান কেয়া বলেন, পুরনো ব্রিজটি ভাঙার পর পাশে কাঠের সাঁকো দিয়ে দেওয়া হয়। তিন বছরে সেটি পুরনো হয়ে ভেঙে খালে নিমজ্জিত। এখন ব্রিজে꧃র কাজ শেষ হলেও পারাপারের জন্য যে কাঠের সিঁড়ি দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকি নিয়েই আমাদের কলেজে যেতে হয়।”

আয়লা এলাকার বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, “আমাদের আয়লা, চান্দখালি, কেওড়াবুনিয়া এই তিন এলাকার বাসিন্দাদের জেলা 𒅌সদরে যাতায়াতে এই ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয়। তিন বছর ধরে আওমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি।”

আবদুর রহমান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ঠিকাদার যে𒅌মন ইচ্ছা কাজ করেছে। আমরা কিছু বলতে গেলে মা𒆙মলা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এখানে তো আসলে এমন কেউ নেই আমাদের দুঃখ বুঝবে। আমরা ব্রিজের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।”

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজের নামেরꦏ কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ওই লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজ করছেন সগীর হোসেন নামের একজন ঠিকাদার। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, নানা সমস্যার কারণে কাজটি সম্পূর্ণভাবে করা সম্ভব হয়নি। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ শেষ করা হবে।  

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ বরগুনা কার্যাဣলয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, “ইতোমধ্যে ব্রিজটির ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সবশেষ বেঁধে দেওয়া সময়সীমা এ বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়েই মধ্যে ঠিকাদার ব্রিজের কাজ শেষ না করলে তার বিল আটকে দেওয়া হবে। আশা কর🉐ি এই সময়ের মধ্যে ব্রিজের বাকি কাজ শেষ হবে।”