শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অঘোষিতভাবে বন্ধে রয়েছে। এ কারণে সকল কাজে স্থবিরতা বিরাজ করছে ওই বন্দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট ও ভারতীয় অংশে সড়ক সংস্কারের কারণে পাথর না আসায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে শ্রমিক সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, প্রায় দুই মাস ধরে আমদানি-রপ্তানি বনꦫ্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বন্দরের সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত অন্তত ৮ হাজার শ্রমিক। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কমে গেছে রাজস্ব আদায়।
সরেজমিনে নাকুগাঁও স্থলবন্দর ঘুরে জানা গেছে, জেলার নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে দুই মাস আগেও ভারত থেকে আসা ট্রাক লোড-আনলোড, পাথর ভাঙা মেশিন, হেমার ও হাতুরির শব্দে মুখরিত ছিল। গত ৯ জুলাই থেকে ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর রপ্তানি বন্ধ করে দেন। এর কারণ হিসেবে তারা জানান, ভারতের অংশে পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কাজ চলছ💯ে। তাই সাময়িকভাবে পাথর রপ্তানি বন্ধ রাখা হবে। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও ভারত থেকে কোনো পাথর না আসায় হতাশ হয়ে পড়েন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ডিপোতে আগে আনা পাথর শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে কর্মহীন হয়ে পড়েন সাধারণ শ্রমিকরা। দুই মাস আগে ভুটান থেকে ১০-১২ গাড়ি পাথর এলেও তা চাহিদার তুলনায় ছিল খুবই নগণ্য। এখন বন্দরের বিভিন্ন ডিপোতে পড়ে আছে শুধু পাথরের ডাস্ট।
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের💃 ব্যবসায়ীরা জানান, স্থলবন্দরের প্রায় দেড় শতাধিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর এলসি করা শত কোটি টাকার পাথর আটকে আছে ভারতে। ওইসব ব্যবসায়🔯ীদের মধ্যে গড়ে প্রায় সবারই দুই থেকে ১০ ট্রাক পাথর আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া ছিল।
এদিকে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর পাঠানোর বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেননি। ভারতের অংশে শুধু সড়ক মেরামতই সমস্যা না। সেখানকার মেঘালয় রাজ্যের স্থানীয় রাজনৈতিক সমস্যাও রয়েছে। ওইসব কারণেও তারা পাথর পাঠাতꦜে পারছেন না।
নাকুগাঁও স্থলবন্দরে💃র সবুজ এন্টারপ্রাইজের মালিক রুস্তম আলী, “আশিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পাথর আসা শুরু হয়ে যাবে এমন আশ্বাস দিয়ে আসছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। আমরাও ওই আশ্বাসের ওপর ভর করে দুই মাস পার করেছি। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। তাই আমাদের দেশের পক্ষ থেকে ভারত সরকার বিশেষ করে মেঘালয়ের রাজ্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলে পাথর ও অন্যসব পণ্য আমদানির বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।”
নাকুগাঁও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আলম ও সাধারণ সম্পাদক সুজন মিয়া বলেন, বছরখানেক আগে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ভুটান ও ভারতের পাথরের ওপর নির্ভর করে টিকে আছে নাকুগাঁও বন্দরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। এখন পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে মানবেꦫতর জীবন যাপন করছেন বন্দরের সাথে নানাভাবে সম্পৃক্ত ৮ হাজার শ্রমিক।
নাকুগাঁও🐷 আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান জুয়েল বলেন, “পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতে আমাদের কোটি কোটি টাকা আটকা পড়ে আছে। এ কারণে ক্ষতির মুখ পড়তে হয়েছে আমাদের।”
নাকুগাঁও বন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, গত জুন মাস পর্যন্ত এ বন্দরে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮৫ লাখ ৮৮ হাজার। জুলাই ও আগস্ট মাসে ভুটানের কিছু পাথর আসায় রাজস্ব আদায় হয়ꦜ মাত্র ৩৩ লাখ টাকা। আর ভারতের পাথর আমদানি চালু থাকলে দুই মাসেই রাজস্ব আদায় হতো কমপক্ষে দেড় কোটি টাকা।