ছোটবেলা থেকে নানা কটু কথা শোনতে হয়েছে নীলকান্তকে। উচ্চতায় ছোট হওয়ায় সবাই দেখত আলাদা চোখে। যেন মান💫ুষের সঙ্গে বসবাস করেও মনে হꦗতো আলাদা এক প্রাণী। অল্পতেই কথার আঘাতে ব্যথা দিতেন প্রতিবেশীরা। বাদ যায়নি নিজের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরাও।
মানুষের সব কথাকে উপেক্ষা করে জীবনতরি চালাতে পিছপা হননি নীল। সমবয়সীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করেছেন পড়াশোনা। স্বপ্ন ছিল ভালো চাকরি করার। সমস্যায় পড়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় সে স্বপ্ন আর আলোর মুখ দেখেনি। চাকরির স্বপ্নে ব্যর্থ হলেও ভালোবাসার স্বপ্নে সফল তিনি। সবাই যখন তার ভবিষ্যতে বিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায়, তখনি জীবনকে রঙিন করে সাজিয়ে নিতে তার জীবনে আসেন গীতা রাণী। একই 🔴উচ্চতা আর মনের মিল হওয়ায় ভালোবাসার শুরুটা হয় তাদের।
কয়েক মাস একজন আরেকজনকে চেনাজানার পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। মানুষের কটু কথাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একসঙ্গে তারা। যেন ভালোবাসার এক অনন্য নিদর্শন। এক🍌সঙ্গে পথচলার পেরিয়েছে ২৫ বছর।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নীলকান্ত ও গীতা দম্পতি। সাংসারিকඣ জীবনে এক মেয়েসন্তানের পিতা-মাতা তারা। দুই যুগ ধরে সংসার করছেন তারা। একজন যেন আরেকজনের পরিপূরক। হাজারো অভাবে ছেড়ে যাননি একে অন্যকে।
প্রতিবেশী স্কুলশিক্ষিকা সাবিত্রী রাণী বলেন, “তারা শুধু দেখতে খাটো। এ💎টিই তাদের একটা অপূর্ণতা। সবার জীবনেই একটা না একটা সমস্যা থাকে। তবে তাদের যে মিল মহব্বত, এটা অনেক বেশি। আমরা তাদের মাঝে কখনো বড় কোনো সমস্🍰যা দেখিনি। তাদের মতো স্বামী-স্ত্রী প্রতিটা সংসারে হওয়া উচিত।”
নীল ও গীতা দম্পতির মেয়ে লিপা বলেন, “আমার বাবা-মা আমার জন্য অনেক কষ✱্ট করেছেন। আমাকে পড়াশোনা করিয়েছেন। অনেকে আমার বাবা-মাকে নিয়ে কটাক্ষ করে। আওমি কষ্ট পেলেও মনে করি আমার বাবা-মা সেরা।”
নীলকান্তের বউ গীতা রাণী বলেন, “আমরা একসঙ্গে থাকতে পেরে অনেক খুশ🐟ি। অভাব তো সবার সংসারে থাকে। আমাদেরও অভাব আছে। বাইরে কাজ করলে আমাদের পারিশ্রমিক কম দেওয়া হয়। তারপরেও থেমে তো আর থাকা যায় না। আমরা একসঙ্গে ২৫ বছর ধরে আছি। বাকি সময়টা একসঙ্গে কাটাতে চাই।”
নীলকান্ত বলেন, “এক মেয়ে আমার। তাকে পড়াশোনা করিয়ে বিয়ে দিয়েছি। বাবার দেওয়া ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছু নেই। শুধু যে ঘরটিতে আমি থাকি, সেটি আমার। বাবা-মায়ের ঘরটা মায়ের নামে। কিছুদিন আগে বাবা মারা গেছেন। এখন দিনমজুরি করি। আমার স্ত্রী সঙ্গ দিয়ে আসছেন। কখন💜ো তিনি আমাকে হতাশ কর🅰েননি। সব সময় আমাকে সাপোর্ট দিয়ে থাকেন। এটি আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।”
নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেরেকুল ইসলাম বলেন, “তারা আমার ইউনিয়নে স্বামী-স্ত্রীর একটি সেরা জুটি। যদিও তারা✃ পারিবারিকভাবে অসচ্ছল। তবে তাদের যে সম্পর্ক, এটি আলাদা দম্পতিদের জন্য শিক্ষণীয়। তাদের প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেওয়া 🌼হয়েছে। এ ছাড়া আমরা চেষ্টা করি তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর।”
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব🤡ু তাহের মো. শামসুজ্জামান বলেন, তাদের ভালোবাসার কথাগুলো শুনে বেশ ভালো লাগল। উপজেলা প্রশাসন তাদ♏ের পাশে সবসময় থাকবে।