যেভাবে সন্ধান মেলে রহিমা বেগমের

হারুন-অর-রশিদ, ফরিদপুর প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২, ১২:৫৩ পিএম

খুলনা নগরের মহেশ্বরপাশা এলাকার নিখোঁজ হওয়া রহিমা বেগমকে🥃 জীবিত অবস্থায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের ২৯ দিন পর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্যার (৫৫) বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

উদ্ধার অভিযানে রহিমা বেগম নিখোঁজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্ত🀅া খুলনার দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফুল হায়দারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বোয়ালমারী থানার পুলিশের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করে।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রহিমা বেগম যে বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন সেই ব🥃াড়ির তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুলনা পুলিশ থানা হেফাজতে নিয়েছে। তারা হলেন বাড়ির মালিক কুদ্দুস মোল্যার স্ত্রী হিরা বেগম (৫০), ছেলে আলামিন বিশ্বাস (২৫) ও কুদ্দুস মোল্যার ছোট ভাই আবুল কালামের স্ত্রী রাহেলা বেগম (৪৫)। তারা এখন খুলনা পুলিশের জিম্মায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। কুদ্দুস মোল্যা বোয়ালমারী উপজেলা ডোবরা জনতা জুটমিলের একজন কর্মচারী।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওস🦩ি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বিষয়টি নিশ্চিত করে জ🐬ানান, নিখোঁজ রহিমা বেগমকে বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। খুলনা থেকে পুলিশের একটি দল এবং বোয়ালমারী থানা পুলিশ শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে। তাকে রাতেই খুলনা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি পরিবারের কারো সহায়তায় বোয়ালমারীতে আত্মগোপনে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কুদ্দুস মোল্যার ভাগিনা জয়নাল বলেন, “আমার মামা কুদ্দুস বিশ্বাস খুলনা শহরের মীরেরডাঙ্গা সোনালী জুটমিলে চাকরির সুবাদে রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আমি ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নানের স্ট্যাটাস থেকে বিষয়টি জানতে পারি। তারপর ওই ছব♚িটি রহিমা বেগমকে দেখিয়ে বলি, এটা আপনার ছবি কিনা? ওই সময় রহিমা বেগম হতভম্ব হয়ে বলেন, আমার ছবির মতই তো লাগছে। তার মেয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেওয়া দুইটি মোবাইল নাম্বার যোগাযোগ করলে রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজের স্ত্রী ফোনটি রিসিভ করেন। রহিমা বেগমের বিষয়টি তাদের বললে তারা ওই নাম্বারে আর ফোন দিতে নিষেধ করেন। তারপর থেকে আমার সন্দেহ হলে রহিমা বেগমকে না জানিয়ে তার (রহিমা) বিষয়টি শনিবার দুপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনকে জানালে তিনি খুলনা মহানগরের ২ নম্বরের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন নিখোঁজ হওয়া রহিমা বেগমই ওই নারী।”

বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোশারফ হোসেন বলেন, “খুলনা মহানগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম আমার পূর্ব পরিচিত। রহিমা বেগমকে না জানিয়ে আমরা কাউন্সিলর সাইফুলকে সবকিছু খুলে বললে তারা খুব দ্൲রুত রহিমা বেগমকে নিয়ে যাবেন বলে জানান। রহিমা বেগম যাতে পালিয়ে না যায় সে বিষয়ে আমাদের নজর রাখতে বলেন কাউন্সিলর। তারপর শনিবার রাতে খুলনা ও বোয়ালমারী থানা পুলিশের উপস্থিতিতে রহিমা বেগমকে খুলনা ন𝄹িয়ে যায়।”

জানা যায়, চলতি বছরের ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাস♚া থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। তার স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ না পেয়ে পরেরদিন🌄 রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী খাতুন দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।

সর্বশেষ পিবিআই মামলাটির তদন্ত করছিল। এরপর গত ২২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১১টার দিকে মরিয়ম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন “আমার মায়ের লাশ পেয়েছি মাত্র”। শুক্রবার ময়মনꩲসিংহের ফুলপুর থানায় উদ্ধার ♏হওয়া অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহের পোশাক দেখে তাকে নিজের মা দাবি করেছিলেন মরিয়ম মান্নান। এদিকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ফেসবুকের মাধ্যমে মরিয়ম জানান, তার মার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে খুলনার পুলিশ সুপার তাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছেন।

আরও সংবাদ