ইলিশের রাজ্যে ধরাছোঁয়ার বাইরে ইলিশ!

বরগুনা প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২, ১০:৪৬ এএম

উপকূলীয় জেলা বরগুনা বাংলাদেশের ইলিশের অন্যতম ভাণ্ডার। প্রতি মৌসুমে বলেশ্বর-বিষখালী-পায়রা এই তিন নদীর মোহনায় প্রচুর ইলꦕিশ ধরা পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতাদের কাছে নদীর ইলিশের চাহিদা প্রচুর। কিন্তু আকাশচুম্বী দামের কারণে ইলিশের রাজ্যেই সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে রূপালি এই মাছ।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকা😼লে বরগুনার বিভিন্ন বাজারে ক্রেতারা সংবাদ প্রকাশের কাছে এ অভিযোগ করেন। এক শ্রেণির অসাধু মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণেই ইলিশের এত আকাশ ছোঁয়া দাম।

দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটার বিক্রয় ও বিপণন কর্মকর্তা মো. রিপন মিয়া সংবাদ 💙প্রকাশকে জানান, ১২০০ থেকে ১৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ সর্বনিম্ন ১ হাজার ৩৭৫ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিকেজি সর্বনিম্ন ১ হাজার ১২৫ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের ইলিশ সর্বনিম্ন ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা এবং ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের কেজি সর্বনিম্ন ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ৮৭৫ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়। এই দামে ইলিশ আড়তদার ও পাইকাররা কিনে নিয়ে দেশে ও ভারতের বাজারে চালান করে দেন।

বিএফডিসি পাইকার সমিতির সভাপতি মো. সাফায়েত হোসেন মুন্সি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বিএফডিসি অকশন শেড থেকে ইলিশ কেনার পর আমরা প্রতি দেড় মন (৬০ কেজি) ইলিশের আড়তদারি বাবদ ৪০০ টাকা নিই। এরপর চালানের জন্য দেড়মণ ইলিশের ককশিড প্রস্তুত করতে বরফ, বস্তা ও লেবার খরচ বাবদ ককশিডে ৭০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এরপর পরিবহনে প্রতিটি ককশিডের জন্য খুলনা পাঠাতে ৩০০ ও ঢাকার জন্য ৪০০ টাকা খরচ হয়। অর্থাৎ বিএফডিসি থেকে কেনার পর প্রতি দেড়মণ ইলিশ চালান করতে প্রায় এক হাজার টাকা খরচ 🌌হয়। এরপর খুলনা বা ঢাকার আড়তে পৌঁছার পর সেখানের আড়তদাররা 𒀰শতকরা তিন টাকা কমিশন নিয়ে বাজারে ইলিশ ছাড়েন।

সাফায়েত মুন্সি আরও বলেন, “কোনো ক্রেতা চাইলেই বিএফডিসি থেকে সরাসরি মাছ কিনতে পারবেন না। কারণ এখানে ইলিশ আসার পরই চালানের জন্য ইলিশ কিনে 𒆙নেন পাইকার আড়তদাররা। কেউ ইলিশ নিতে চাইলে পাইকার ও আড়তদারদের কাছ থেকে কিনতে হবে।”

জাহাঙ্গীর জমাদ্দার পাথরঘাটা বিএফডিসি আড়তদার সমিতির সভাপত🍰ি বলেন, “আমরা বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা ট্রলারে দাদন দিয়ে রাখি। ওই টাকার বিপরীতে মনপ⛄্রতি ৪০০ টাকা করে রাখি।”

জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল খালেক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “পাইকার আড়তদারদের সিন্ডিকেটের কারণে ইলিশ ন্যায্য দামে স্থানীয়রা কিনে খেতে পারে না। তিনটি নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনাসহ এলাকার সব মাছ বিএফডিসি পাথরঘাটায় অবতরণ হয়। বিএফডিসিতে অবতরণ হওয়া ইলিশের একটি অংশ বাধ্যতামূলকভাবে ইলিশ সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রির নিয়ম করা হলে এই সমস্যা আর থ✨াকবে না।”

দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বিএফডিসি পাথরঘাটার 🐼ব্যবস্থাপক লে. এম লুৎফর রহমান (বিএন) সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মাছ অবতরণের পর অকশন শেডে নিলাম 🍷হয়। পাইকাররা নিলামে ইলিশ কিনে নেন। আমরা শুধু হিসাব রাখি কত টন ইলিশ অবতরণ হয় ও কত টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। সেই হিসাবে আমরা সরকারে পক্ষে রাজস্ব আদায় করে থাকি। আমরা শুধু এখানে অবতরণ ও বিপণনের কাজ করি, বাজার আমাদের নিয়ন্ত্রণ নয়।”