৪০ বছর বয়সে একসঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছেন স্বামী-স্ত্রী

নাটোর প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২, ০৩:১৩ পিএম

শিক্ষার কোনো বয়স নেই। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মনোবলই পারে সকল কৃতিত্ব অর্জন করতে। মনের ভেতর লুকিয়🎀ে থাকা স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলতে পারলেই যেকোনো সাফল্য অর্জন সম্ভব। তাই বয়সকে তুচ্ছ করে ৪০ বছর বয়সে শিক্ষা অর্জনে একসঙ্গে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের এক দম্পতি।

বৃহস্পতিবা♊র (১৫ সেপ্টেম্বর) নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা পৌর সদরের বেগম রোকেয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এই দম্পতি।

গুরুদাসপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খামারনাচঁকৈড় মহল্লার মৃত আসাদ আলী মোল্লার ছেলে ও সাবেক কাউন্সিলর মো. ফজলুর রহমান (৪০)। স্ত্রী মোছা. মর্জিনা বেগম (৩০) একই মহল্লার মৃত মজ🃏িবর রহমানের মেয়ে।

দুজনই উপজেলার বিয়াঘাট কারিগরি🥃 কম⛦ার্স কলেজের ভোকেশনাল শাখার ২০২২ সালের শিক্ষার্থী।

ফজলুর রহমান বলেন, “আমার বয়স এখন ৪০ বছর। আমার স্ত্রীর প্রায় ৩০ বছর। আমাদের সংসারে দুই ছ🍰েলে-মেয়ে আছে। দীর্ঘদিন পর আমরা দুইজন সিদ্ধান্ত নেই আমরা আবার পড়াশোনা শুরু করবে। পরে দুজনই একই সঙ্গে বিয়াঘাট কারিগরি কমার্স কলেজে ২০২০ সালে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। নিয়মিত স্কুলে না যেতে পারলেও বা🔜ড়িতে দুইজন পড়াশোনা করতাম। করোনার কারণে প্রথমে পরীক্ষা না হলেও ২০২২ সালে এসে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা ছিল। আমরা দুইজন একসঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি এবং আমাদের পরীক্ষাও অনেক ভালো হয়েছে। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছি। সাধ্যমত চেষ্টা করবꦫ উচ্চ ডিগ্রি অর্জন করার।”

ফজলুর রহমান আরও বলেন, “৫ বছর কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করে সাধারণ মানুষের সেবা ক✤রেছি। অনেক জায়গায় ঘুরেছি। দেখেছি যারা নিরক্ষর তাদের কষ্ট এবং তাদের ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যত। আমি এসএসসি পাশ করার পর ডিপ্লোমা কোর্স করব, স্ত্রীকেও করাব। একসময় আমার ছেলে-মেয়ে বড় হয়ে তারা গর্ববোধ করবে তাদের বাবা মাও শিক্ষিত।”

মর্জিনা বেগম বলেন, “আমি ২০০৯ সালে পড়াশোনা বাদ দিয়েছিলাম। আমার স্বামীর আꦚগ্রহে দুজন পরামর্শ করে আবার নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছি। দুইজন একসঙ্গে বাড়িতে পড়াশোনা করেꦑ একসঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছি। আমার খুব ভালো লাগছে। আমরা আরও অনেক পড়াশোনা করতে চাই।”

গুরুদাসপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “এই বয়সে এসেও তাদের পড়াশোনার প্রতি যে আগ্রহ, তা প্রশংসনীয়। তাদের কাছে থেকেဣ সকলের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।”