পাতালপথ কমিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২২, ১০:৫৭ এএম

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রতিনিয়ত ঘটত দুর্ঘটনা। বিশেষ করে পথচারীরা রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রায়ই গাড়িচাপায় প্রাণ হারাতেন বা আহত হতেন। তাই পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধার্থে উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল আন্ডারপাস নির্মাণের। অবশেষে পূরণ হলো সেই দাবি। উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা এলাকায় এক্সꦑপ্রেসওয়ের নিচ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে পাতালপথ।

সরেজমিন দেখা যায়, নিমতলা ইছামতী শাখা 🔜খালের ওপর নির্মিত সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের নিচে এ দৃষ্টিনন্দন পাতালপথ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে একপাশ থেকে অন্যপাশে সহজে চলাচল করছে পথচারী। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা থেকে পথচারীরা মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ আগস্ট নিমতলায় প্রা🌳ইভেট কারের চাপায় নিহত হন অনিক শেখ। এরপর ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেন উপজেলাবাসী। এর পরিপ্রেক্ষিতে প🐼াতালপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০১৬ সালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েটির কাজ শুরু হয়। এটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ঢাকা থেকে মাওয়া এবং জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৪ কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন (পশ্চিম) সড়কটি নির্মাণ করে। মূল এক্সপ্রেসওয়েটি চার লেনের। সেতুর দুই পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য সাড়ে পাঁচ মিটার প্রশস্ত সড়ক রাখা হয়েছে। এই ৬ লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে ২টি সার্ভিস লেন, ৫টি ফ্লাইওভার, ১৯টি আন্ডারপাস, ২টি ইন্টারচেঞ্জ, ৪টি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ, ৪টি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু ও ৫৪টি কালভার্ট রয়েছে। প🧸দ্মা সেতুর সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশ সংযুক্ত করা হবে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়েটি পার হতে গিয়ে গাড়িচাপায় অনেক পথচারী প্রাণ হারিয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ঘটেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এ ছা💞ড়া পেছন থেকে গিয়ে অন্য গাড়ি ধাক্কা, ধীরগতির গাড়িকে দ্রুতগতির গাড়ির ধাক্কা, ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারানো ও বেপরোয়া গতিতে দুর্ঘটনাও ঘটেছে।

হাঁসাড়া হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি ব⭕ছরের ৫ মার্চ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটারের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রায় ৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮০ জনের। আহত হয়েছেন ৯০ জন।

পথচারী মো. মামুন হোসেন বলেন, “এ আন্ডারপাস নির্মাণ করায়🌠 আমাদের অ🌊নেক উপকার হয়েছে। নিমতলার এপাশ থেকে ওপাশে যাওয়ার জন্য প্রায় ২০ টাকা রিকশা ভাড়া দিতে হতো। আবার মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটত। এখন সহজেই ২-৪ মিনিটে ওই পাশের বাজারে যেতে পারব।’

গৃহিণী আয়েশা বলেন, “নিমতলার পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে বাজারে যেতে হলে রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। রিকশায় ২০ টাকার ওপরে ভাড়া নেয়। তারপরও অনেক সময়ে রিকশা পাওয়া যায় না। হেঁটে যেত൩ে হয়। এই ব্রিজটি হওয়ায় আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়েছে।”

হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)🏅 মো. আফজাল হোসেন বলেন, “এই স্থানে মাঝেমধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটত। পাতালপথ নির্মাণ হওয়ায় এই দুর্ঘটনা থেকে মানুষ মুক্তি পাবে এবং সহজে একপাশ থেকে আরেক পাশে যেতে পারবে।”

উপজেলা পরিষদ ভ💜াইস চেয়ারম্যান মঈনুল হাসান নাহিদ বলেন, “এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা অংশে পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধার্থে পাতালপথ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন মানুষ সহজে পারাপার হতে পারছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”