চায়না কমলায় ভাগ্য বদল মির্জাপুরের দিলুর

হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৯:৪৭ পিএম
চায়না কমলা আবাদ করে ভাগ্য বদল দিলুর। মির্জাপুর উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের দিলুর বাগান থেকে তোলা।

স্নাতক পড়া অবস্থায় বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বায়িং হাউজের ব্যবসা শুরু করেন দেলোয়ার হোসেন দিলু। পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করেন। পাশাপাশি গড়ে তোলেন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। করোনার আগে ব্যবসার পাশাপাশি নিজ জমিতে শখের বসে ফলের বাগান শুরু করেন। করোনার কারণে ব্যবসায় ক্✅ষতিগ্রস্ত হলে ফল বাগানে দিকে মনোযোগ দেন। প্রথমে অল্প জমিতে ফলের বাগান শুরু করলেও এখন তা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৬ একর জমিতে। নিজের মিশ্র ফলের বাগানের নাম দিয়েছেন দিলু এগ্রো ফার্ম। চায়না কমলা আবাদ করে বর্তমানে সাফল্যের মুখ দেখেছেন তিনি।

দিলুর বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপ꧙ুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাগানে চায়না কমলার বাম্পার ফলনಌ হয়েছে। কমলা গুলো গাছে গাছে ঝুলছে। এ যেন চোখের তৃপ্তি। ১৪০টি চায়না কমলা গাছে কমলা ধরেছে থোকায় থোকায়। অনেকেই🐻 কমলার সাথে তুলছেন ছবি। প্রতিটি গাছে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি কমলা তোলা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে কমলার গাছ দেখতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। বাগান দেখে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকে। চায়না কমলা ছাড়াও তার ১৬ প্রকারের ফলের বাগান রয়েছে।

তরুণ উদ্য꧋োক্তা দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, “আমি যখন পড়াশোনা করি তখন থেকে বিভিন্ন দেশে ঘোরাঘুরি করি। ওইখান থেকে আমার ধারণাটা আসে। আমি এ বছর বাগান উন্মুক্ত করে দিয়েছি। সামনে কীভ꧙াবে আগাতে পারি ওই চিন্তা ভাবনা নিয়ে নতুন করে পথ চলার স্বপ্ন দেখছি।”

দিলু বলেন, “করোনার সময় ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১০০ পেয়ারার গাছ দিয়ে বাগান শুরু করি। তারপর থেকে ফলের বাগানে মনোযোগ দিই। নিজ জমিতে শুরু করি ফলের বাগান। নিজের ফলের বাগানের নাম দিয়েছি ‘দিলু এগ্রো ফার্ম’। আমার বাগানটি মিশ্র ফলের বাগান। আমার বাগানের মূল আকর্ষণ চায়না কমলা। সাড়ে ছয় একর জমিতে রয়েছে ফলের বাগান। ২০১৮ সালে ডিসেম্বর মাসে এক একর জমিতে ১৪০টি চায়না কমলা গাছের চারা রোপণ করি। ২০২০ সালে আমার কমলা গাছে ফুল আসে তখন ফুল ফেলে দেই। ২০২১ সালে কমলা আশা শুরু করে। এরপর ২০২২ সালে থেকে বাণিজ্যিকভাবে কমলা বিক্রি করা শুরু করি। তখন আড়াই লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছিলাম। চলতি বছর ৪ লাখ🥃 টাকার উপরে বিক্রি হয়ে গেছে। আশা করছি আরও দুই লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হবে। সব মিলিয়ে এবছর ছয় লাখ টাকার ওপরে কমলা বিক্রি হবে। আমার ছয় বছরে খরচ হয়েছে সর্বমোট ছয় লাখ টাকা। তিন বছরে বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ টাকা। আগামী বছর বিক্রির টার্গেট নিয়েছি ১০ লাখ টাকা। একেকটি কমলা 🥀গাছ ২৫-৩০ বছর কমলা দেয়। ফল বিক্রি করে বছরে আয় তার চার লাখ টাকা।”

এই উদ্যোক্তা বলেন, “আমার মিশ্র বাগানে বছরে ২০ লাখ টাকার ফল বিক্রি হয়। কৃষি অফিস থেকে আমাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেন। আমার আশা আছে আগামী বছর আরও বড় পরিসরে কমলার বাগান করার। আমার বাগা𒊎নে প্রতিদিন চারজন শ্রমিক কাজ করেন। তাদে🀅র জন প্রতি ৪৫০ টাকা দিতে হয়।”

কালিয়াকৈর থেকে কমলা বাগান দেখতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমি ফেসবুকে দেখে কমলা বাগানটি দেখার জন্য এসেছি। আমরাও এ রকম কমলা ব🎐াগান করার ইচ্ছে আছে।”

মির্✱জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন বলেন, “আমরা কমলা চাষি দেলোয়ার হোসেনের বাগান পরিদর্শন করেছি। এই বাগানে ১৪০টি চায়না কমলা গাছ রয়েছে। এই বাগানটি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ও পরামর্শগত সহায়তা প্রদান করেছি।”